pod kake bole |পদ কাকে বলে?| পদ কত প্রকা ও কি কি? snigdhasokal.com
পদ কাকে বলে? | pod kake bole| বাকে্য ব্যবহৃত শব্দকেই পদ বেল। এ ধারণা আজ যথার্থ নয় । শব্দকে পদে পরিণত হতে হলে বিশেষ একটি গুণ তাকে অর্জন করতে হয়। আর তা হচ্ছে বিভক্তি গ্রহণ।
আরো পড়ৃনঃ শব্দ কাকে বলে?
পদ এর সংজ্ঞাঃ
বিভিক্তি যুক্ত শব্দকে পদ বলে। যেমন – করিম বল খেলে। এ বাক্যে করিম, বল এবং খেলে – এ তিনটি পদ আছে। করিম এবং বল কোন বিভক্তি প্রত্যক্ষভা বে গ্রহন না করলেও পরোক্ষভাবে এর বিভক্তি গ্রহণ করেছে। সে বিভক্তিটি হচেছ মূণ্য বিভক্তি। বিভক্তিহীন শব্দ বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে না। আর বিভক্তি গ্রহণ করলেই শব্দের নাম পরিবর্তিত হয়ে পদ হয়।
পদ কত প্রকার?
পদ পাঁচ প্রকার যথাঃ-
১। বিশেষ্য
২। বিশেষণ
৩। সর্বনাম
৪। অব্যয়
৫। ক্রিয়া
১ । বিশেষ্য পদঃ
যেসব পদ দিয়ে কোন ব্যক্তি, বস্তু, বিষয়, ভাব,দোষ, গুণ ইত্যাদির নাম বোঝায় তাদেরকে বিশেষ্য পদ বা নাম পদ বলে।
যেমনঃ রবি, পাথর, বাংলা, দয়া, দুঃখ ইত্যাদি।
বিশেষ্যকে আবার নানা ভাগে ভাগ করা হয়েছে । আমরা বিশেষ্য পদকে ছয়টি শ্রেণিতে বিভক্ত করতে পারি। যথাঃ-
নামবাচকঃ রনি, ঢাকা, ইংরেজ, ইসলাম ইত্যাদি।
জাতিবাচকঃ মানুষ, পাখি, নদী, গাছ ইত্যাদি।
বস্তুবাচকঃ লোহা, জল, চিনি, দুধ ইত্যাদি।
গুণবাচকঃ সততা, সুখ, যৌবন, দয়া ইত্যাদি
সমষ্টিবাচকঃ সমাজ, সভা, সমিতি, পাল ইত্যাদি
ক্রিয়াবাচকঃ গমন, শয়ন, ভোজন, দর্শন ইত্যাদি
২। বিশেষণ পদঃ
বিশেষণ বলতে যেসব পদ দিয়ে বেশেষ্যের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি বোঝায় তদেরকেই বুঝায়। আসলে বিশেষণ অন্য পদকেও বিশেষিত করে। তাই বলা উচিত, ’যে পদ অন্য পদকে বিশেসিত করে তাকেই বিশেষণ বলে।’
বিশেষণ পদকে আবার কয়েক প্রকারে ভাগ করা হয়েছে । যেমনঃ-
বিশেষ্যের বিশেষণঃ অন্ধকার রাত, উজ্জ্বল আলো, পোষা পাখি ্ইত্যাদি।
বিশেষণের বিশেষণঃ ধবধবে সাদা, খুব ভালো, কুচকুচে কালো, টুকটুকে লাল, টসটসে পাকা ইত্যাদি।
ক্রিয়া বিশেষণঃ খুব আস্তে চলো, অতি দ্রুত হাাঁটো, ধীরে ধীরে খাও ইত্যাদি।
বিধেয় বিশেষণঃ ঘরটি ভাঙা, বাড়িটা নতুন, তিনি ধনী ইত্যাদি।
সর্বনামের বিশেষণঃ কোন সে সঠিক, এই ছোটলোক ইত্যাদি।
পরিমাণবাচক বিশেষণঃ অনেক লোক, অল্প কাজ, একটু জল ইত্যাদি।
সংখ্যাবাচক বিশেষণঃ দুদিন, পাঁচটি টাকা, এক লিটার দুধ ইত্যাদি।
পূরণবাচক বিশেষণঃ দোসরা ভাদ্র, বিংশ শতাব্দ, পহেলা কার্তিক, একুশে ফেবৃুয়ারি ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ সমাস কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?
৩। সর্বনাম পদঃ
বিশেষ্য বা নাম পদের পরিবের্তে যে পদ ব্যবহৃত হয় তাকে সর্বনাম পদ বলে। যেমন- সে, ওরা, আমি, তোমরা ইত্যাদি।
সর্বনাম পদের প্রকারভেদ: সর্বনাম পদকে বিভিন্ন প্রকারে ভাগ করা হয়েছে যেমনঃ
পূরুষ বাচকঃ তুমি, সে, আমি, আপনি ইত্যাদি।
সাকল্যবাচকঃ সকল, সব, উভয় ইত্যাদি
সােপেক্ষঃ যিনি, যা, যত, ইত্যাদি।
প্রশ্নসূচকঃ কে, কি, কী ইত্যাদি।
অনিশ্চয়তামূলকঃ কিন্তু, কেউ, কি-ই বা, আর কেউ ইত্যাদি।
আত্মবাচকঃ স্বয়ং, খোদ, নিজে, আপনি ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ- ভাজ্য কাকে বলে?
৪। অব্যয় পদঃ
বচন, লিঙ্গ বা বিভিক্তিতে যে পদের কোন পরিবর্তন সাধিত হয়না তাকে অব্যয় পদ বলে। যেমনঃ- ও, এবং, বরং, আর ইত্যাদি।
অব্যয় পদের প্রকারভেদ: অব্যয় পদ প্রধানত চার প্রকার –
১।সমুচ্চয়ী
২।অনন্বয়ী
৩।অনুসর্গ ও
৪। অনুকার।
সমুচ্চয়ী অব্যয়ঃ
দুটি পদ বা বাক্যের মধ্য সম্বন্ধ স্থাপনকারী পদের নাম সমুচ্চয়ী বা সমন্ধ বাচক অব্যয় পদ । এর তিন প্রকার।
- সংযোজক: ও, এবং, আর, এজন্য, সুতরাং ইত্যাদি।
- বিয়োজক: বা, কিংবা, অথবা, নয়ত ইত্যাদ।
- সংকোচক: বা, কিংবা, অথবা, নয়ত, ইত্যাদি।
অনন্বয়ী অব্যয় আবার চার প্রকার যথা=
- সম্বোধনসূচক: ওহে, রে, ওলো ইত্যাদি।
- প্রশ্নসূচক: কেমন, নাকি, কিভাবে ইত্যাদি।
- মনোভাব বাচক: ছি ছি, নাঃ, আর ইত্যাদি।
- বাক্যালঙ্কার: যে, তা, ত, বৈকি, আর ইত্যাদি।
অনুসর্গ অব্যয়ঃ
সব অনুসর্গই অব্যয়। এর বিশষ্য ও সর্বনাম পদের পরে বসে বিভক্তির কাজ করে। দ্বারা, দিয়ে, কর্তৃক, থেকে, চেয়ে ইত্যাদি অনুসর্গ অব্যয়।
অনুকার অব্যয়ঃ
ধ্বনির অনুকরণে গঠিত অব্যয়কে ধ্বনাত্বক অব্যয় বা অনুকার অব্যয় বলে। যেমন- শোঁ শোঁ, ভনভন, কনকন, সাঁ সাঁ, শন্ শন্ ইত্যাদি অনুকার বা ধ্বনাত্মক অব্যয়।
৫। ক্রিয়া পদঃ
যে পদ দিয়ে কোন বিশেষ সময়ে কিছু করা বোঝায় তাকে ক্রিয়া পদ বলে। যেমন:- ধরেছি, মারা, খা’ব ,পড়ব ইত্যাদি।
প্রকারভেদঃ ক্রিয়াপদ প্রথমত দু’প্রকার: সমাপিকা ক্রিয়া ও অসমাপিকা ক্রিয়া।
সমাপিকা ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়া ব্যবহারে বাক্যের ভাব পুরোপুরি প্রকাশ পায় তাই সমাপিকা ক্রিয়া । যেমন”- দেখেছি, আসব, করছি ইত্যাদি।
অসমাপিকা ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়া ব্যবহারে ভাব অসমাপ্ত থেকে যায় তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমনঃ- গিয়ে, দেখে, খেয়ে, নেয়ে েইত্যাদি।
ক্রিয়ার উভয় শ্রেণি আবার দুই প্রকার যথাঃ- ১। সকর্মক ক্রিয়া । ২। অকর্মক ক্রিয়া
সকর্মক ক্রিয়া: বাক্যে যে ক্রিয়ার কর্ম থাকে তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন: – রীনা চিঠি লিখছে। বীনা গান শুনছে।
সকর্মক ক্রিয়া একাধিক কর্ম ধারণ করলে তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে।
যেমন: – সে মাকে চিঠি লেখছে।
অকর্মক ক্রিয়াঃ
বাক্যে যে ক্রিয়া কর্ম থাকে না তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমনঃ – সে দৌড়ায় , সেলিনা পড়ে।
যৌগিক ক্রিয়াঃ
আ, ইয়া, ইতে প্রত্যয় যুক্ত ক্রিয়াপদের সাথে অন্য কোন সহকারি ক্রিয়া যুক্ত হয়ে বাক্য গঠন করলে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। যেমন- খাইতে থাক > খেতে থাক, উঠিয়া পড়িলাম ? উঠে পড়লাম।
প্রযোজক ক্রিয়াঃ
কাজ নিজে না করে অন্যের মাধ্যমে করানো হলে সে ক্রিয়াটি প্রযোজক ক্রিয়া হবে। যেমন:- শিক্ষক ছাত্রদের অঙ্ক করাচ্ছেন।