সংসারে সাগরে দু:খ তরঙ্গের খেলা,আশা তার একমাএ ভেলা ভাবসম্প্রসারণ
সংসারে সাগরে দু:খ তরঙ্গের খেলা,আশা তার একমাএ ভেলা ।
মানুষের জীবনের চলার পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয় ।সে পথ নানা বাধা –বিঘ্নে ভরা ।সমস্যাসঙ্কুল সংসারের প্রতিকুল পরিবেশে আশার ওপর নির্ভর করেই মানবজীবনের দিনগুলো অতিবাহিত হয় ।সাগরে যেমন অসংখ্য তরঙ্গ ওঠে বিক্ষুদ্ধ করে রাখে তার বুক ,তখন জলযান পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে তেমনি সংসারূপ দু:খ –সাগরে এ ধরনের অসংখ্য প্রতিবন্দতা মানুষকে গ্রাস করতে চায ।সে উওাল দু:খের সাগর মানুষ অতিক্রম করে আশার তরণী ,ভাসেয়ে ।মানুষ যেমন ভেলা ভাসিয়ে উওাল তরঙ্গ পাড়ি দেয় তেমনি সংসার-সাগরেও সঙ্কট উওরণের জন্য অবল্মনকে আশ্রয় করতে হয় ।আর অবলব্মন হলো মানুষের আশা-আকাক্ষা ।আজকের দিনের সমস্যা ও দু:খের দিনগুলো আগামী দিনে থাকবে না ,আগামী দিনগুলো ভালো হবে, বয়ে আনবে কল্যাণ ,এই আশাতেই মানুষ স্বাভাবিকভাবে দু:খ-কষ্টকে মেনে নেয় –সুখের আশায় ।বস্তুত আশা না থাকলে মানুষ তলিয়ে যেত দু:খ সমুদ্রে-আশায় দুয়ারে প্রতিটি মানুষের অতিথি ।তাই মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন হলো আশা ,আশাই মানুষকে সাফল্য পতের এগিয়ে নিতে প্রেরণা যোগায় ।বর্তমানের ওপর দাঁড়িয়ে আছে যে জীবন ,তার মধ্যে প্রেরণা জোগায় ভবিষ্যতের আশা ।আশা মানুষকে দেয় পথ চলার প্রেরণা,দেয় সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধির আশ্বাস ।এই আশা এমনই যে তা পূরণ হবার পরও লুপ্ত হয়ে যায় না ,বরং অন্য কোনো ধরনের নতুন আশায় রূপান্তরিত হয়ে আবারও মানবমনকে অধিকার করে ,এ হলো এক অফুরান শক্তির উৎস ।‘আশাকে ত্যাগ করলেও সে …ফিরে ফিরে আসে ।’আর আসে বলেই নিরুদ্বিগ্নভাবে চলছে পৃথিবী,গঠিত হচ্ছে নতুন নতুন সমাজ ব্যবস্থা ,অট্রালিক ,সম্ভব হচ্ছে নতুন নতুন উদ্ভাবন ।আশা আছে বলেই শত প্রতিকুলতার মধ্যে ও মানুষ বিশ্বজগৎকে শতভাবে অক্লান্ত পরিশ্রমে ঢেলে সাজাচ্ছে ,সাজাবেও । জীবন কেটে যায় ।সহস্র দু:খ-বেদনা আর প্রতিকুলের বিরুদ্ধে মানুষ রুখে দাঁড়ায় ,বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে আশার ভেলায় ভর করে ।
সংসারে সাগরে দু:খ তরঙ্গের খেলা,আশা তার একমাএ ভেলা ।
পার্থিব জগতের দু:খসংকুল জীবনে মানুষ প্রতিনিয়ত বিপযস্ত ।তারপরও দু:খের অমানিশা দূর করে তারা সুখের সোনালি সকালের প্রত্যাশায় থাকে ।জীবনেরে সংক্ষিপ্ত পরিসরে মানুষ জানে না কখন তার দু:খের রাত পোহানে ।জানেনা বলে মানুষ আশায় বুক বাঁধে ,বেঁচে থাকে ।সাগরের উওাল তরঙ্গের আঘাতে যেমন স্থলভাগ সাগরগর্ভে হারিয়ে যায় ,তেমনি মানুষ দু:খ – দৈন্যের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয় ।সারাটাজীবন তার দু:খ দৈন্য আর আশাভঙ্গের হতাশায় সমাচ্ছন্ন হয়ে যায় ।তবুও আশায় প্রদীপ জ্বলে নিরবচ্ছিন্ন ।আশাহিন জীবনের কোনো মূল্য নেই ।সুখের পায়রাগুলো ওড়াওড়ি করে আশার আকাশজুড়ে ।নতুন প্রত্যয়ে সে উদ্দীপ্ত হয় ।সুখ- ভোগের সমস্ত বাধাগুলো অতিক্রম করে সে এগিয়ে যেতে চায় সংসাররূপ সাগরে দু:খের তরঙ্গমালার আক্রোশের মুখোমুখি আশার ভেলার মতো ।সহস্র দু:খ বেদনা আর প্রতিকুলতার বিরুদ্ধে মানুষ রুখে দাঁড়ায় ,বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে আশার ভেলায় ভর করে ।
সংসার-সমুদ্রে মানুষ অক্লান্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ছিনিয়ে নেয় জয়মাল্য ।আশাই তাদের জীবনের একমাএ হাতিয়ার ।মানুষ যখন চাওয়অ –পাওয়া ও হতাশার দ্বন্দে দ্যেদুল্যমান ,তখন আশােই মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায় সম্মুখপানে ।
সংসারে সাগরে দু:খ তরঙ্গের খেলা,আশা তার একমাএ ভেলা ।
সম্প্রসারিত ভাব : সুখ-দু:খে ঘেরা মানুষের সংসারে সাগর ।পৃথিবীতে যেমন সুখ আছে,তেমনি দু:খও আছে ।সুখ পেতে হলে বিশাল দু:খের পাহাড় পার হতে হয় ।আশা আছে বলেই মানুষ সব দু:খ সহ্য করে দু:খের দোরগোড়ায় পৌছাতে পারে ।সাগরের বুকে যেমন অসখ্য ঢেই নেচে বেড়ায় ,পৃথিবীর বুকেও তেমনি অপরিমের দু:খথ বিরাজ করে ।সাগর পাড়ি দিতে ভেলা যেমন একমাএ সম্বল ,দু:খের পাথার পাড়ি দিতেও আশা তেমনি একমাএ নির্ভর ।প্রতিটি মানুষেই সুখ চায় এবং সেজন্য সে যত রকম উপায় আছে ,সেগুলো অবলম্বন করে থাকে তাতে তার যত দু:খ –কষ্টই হোক না কেন ,সে কোনো কিছুই মনে করে না ।তার সামনে সবসময় থাকে সুখ লাভ করার আশা ।তাই কোনো সময় ব্যর্থকাম হলেও আশা তার সাহস ও উদ্যম অটুট রাখে ।তার ফলে সে অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারে ও অবশেষে সুখের নাগাল পায় ।আশা না থাকরে সে ব্যর্থ হয়েই ভেঙে পড়ত এবং চালিয়ে যেতে পারত না ।ফলে সে কোনোকালেই সুখের সন্ধান পেত না ।তাই সাগরের ভেলার মতো আশাই দু:থকে পাড়ি দিয়ে সুখের কিনারায় পৌছে দেয় ।আশা আছে বলেই মানুষ বারবার সুখের স্বপ্ন দেখে ।আশা মানুষকে নতুন করে বাঁচতে শেখায় ।