শিক্ষা

শব্দ কাকে বলে? | sobdo kake bole | snigdhasokal.com

(শব্দ কাকে বলে?)  বাংলা ভাষা আজ শব্দ সম্ভারে স্বয়ংস্পূর্ণ। পর্যাপ্ত শব্দ ভান্ডার নিয়ে আজ বিশ্বের সমৃদ্ধতর ভাষার শ্রেণিভূক্ত। বাংলার বিশাল শব্দ ভণ্ডার গড়ে তোলার নেপথ্যে রয়েছে পৃথিবীর অনেক ভাষারই অবদান। আমাদের বাংলা ভাষা ইন্দো- ইউরোপীয় মূলভাষার সদস্য। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা থেকে প্রাকৃত  ও অপভ্রংশে স্তর পেরিয়ে বাংলা ভাষা গড়ে উঠে। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা রূপ বৈদিক ও সংস্কৃত ভাষায় বিদ্যমান ছিল। বাংলা তা থেকে প্রচুর শব্দ  গ্রহণ করেছে অসঙ্কোচে। এ ছাড়া দেশিয় অনার্য শ্রেণির মানুষের ভাষা তো আছেই । বিদেশিরা ধর্ম প্রচারে, ব্যবসায় বাণিজ্যের কারণে এবং শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে এ দেশে আসে, অবস্থান করে। দীর্ঘদিনের অবস্থানের ফলে তারা রেখে গেছে তাদের ভাষার অসংখ্য শব্দ। ফলে বাংলা ভাষা স্বভাবতেই লাভ করেছে বিশাল শব্দ সম্ভার। যে কাণে শব্দ ভাণ্ডারে বাংলা ভাষা নিঃসনেএহ অত্যন্ত সমৃদ্ধ।

শব্দ কাকে বলে? | sobdo kake bole | snigdhasokal.com

আরো পড়ুন ঃ ভাজ্য কাকে বলে?

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত মোট শব্দ সংখ্যা প্রায় সোয়া লক্ষ্য । এদের  মধ্যে প্রায় পঞ্চাশ হাজার তৎসম, আড়াই হাজারের মত আরবি, ফারসি,তুর্কি শব্দ। চারশ, আটশ ইংরেজি, দিড়শ পর্তুগিজ ও ফারসি , অবশিষ্ট সংখ্যক দেশি ও তদ্ভব শব্দ।

Table of Contents

শব্দ কাকে বলে?

শব্দের সংজ্ঞাঃ  ”অর্থবোধক ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টিকে শব্দ বলে”।
যেমনঃ- ঐ, কলা, বক, কলম, আমার, তোমার, গাছ, মাছ ইত্যাদি শব্দ।

শব্দের  শ্রেণিবিভাগঃ

বাংলা শব্দ ভাণ্ডারকে তিনটি দৃষ্টিভঙ্গিতে শ্রেণি বিভক্ত করা হয়:
ক। উৎস বা উৎপত্তি অনুযায়ী
খ। অর্থ অনুযায়ী।
গ। গঠন অনুযায়ী।

উৎস অনুযায়ী শব্দের শ্রেণিবিভাগ

বাংলা  ভাষার শব্দসমূহ যেসব উৎস থেকে উৎপন্ন হয়েছে তা বিবেচনায় বাংলা শব্দ ভাণ্ডারকে পাঁচটি মতান্তরে ছয়টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এই ভাগগুলো নিচে  দেওয়া হলো।
১। তৎসম শব্দ।
২। অর্ধ তৎসম শব্দ।
৩। তদ্ভব শব্দ।
৪। দেশি শব্দ।
৫। বিদেশি শব্দ।
৬। মিশ্র শব্দ।

তৎসম শব্দ কাকে বলে? 

 তৎ অর্থ তার ( সংস্কৃতের) আর ’সম’ অর্থ সমান। অর্থাৎ তৎসম শব্দটির অর্থ হলো সংস্কৃতের সমান। সংস্কৃত ভাষায়  যেসব শব্দ সম্পূর্ণ অপরিবর্তিত অবস্থায় বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে তাদেরকে তৎসম শব্দ বলে। 
যেমনঃ- ঘৃত, চন্দ্র, মস্তক , পঙ্কজ, ভ্রাত ইত্যাদি
ড. হুমায়ূন আজাদের মতে, প্রাচীন ভারতীয় আর্য বা সংস্কৃত ভাষায় বেশকিছু শব্দ অটল -অবিচল। তারা বদলাতে চায় না। শতকের পর শতক তার অক্ষয় থাকে ।  এমন বহু শব্দ অক্ষর, অবিনশ্বর এসেছে বাংলায় এগুলোকে বলা হয় তৎসম শব্দ্। তৎসম একটি পারিভাষিক। এসব শব্দ সংস্কৃত ভাষায় যেরূপ ছিল বাংলা ভাষায়ও ঠিক সেরূপ আছে। বানান ও আকৃতিতে এর সংস্কৃরে সমান বলে এ শব্দগুলোর নাম হয়েছে তৎসম্।
কতিপয় কিছু তৎসম শব্দ নিচে দেওয়া হলো
চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র, পাত্র, ভবন, ধর্ম, মনুষ্য, হস্ত, বৃক্ষ, ভ্রাতা,পিতা, মাতা, চন্দন, সন্ধ্যা, রাত্রি, গৃহ,দধি,পেট,পত্র, অন্ন, ভূবন, ধুম্র, মুক্তি ইত্যাদি।

অর্ধ তৎসম শব্দ কাকে বলে?

সংস্কৃত ভাষায় যেসব শব্দ লোকমুখে বিকৃত উচ্চারণের  মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে তাদের অর্ধ তৎসম শব্দ বলে। তৎসম মানে সংস্কৃত শব্দ। আর অর্ধ – তৎসম মানে আধাসংস্কৃত। তৎসম শব্দ থেকে বিকৃত উচ্চারণের ফলে অর্ধ -তৎসম শব্দ  উৎপন্ন হয়ে থাকে। সংস্কৃতের উচ্চারণরীতি বাংলায় অনুসরণ করা হয় না। ফলে সাধারণ লোকজন সংস্কৃত শব্দের উচ্চারণে বহু রকম ভূল করে ফেলে এবং সেসব ক্ষেত্রে সংস্কৃত শব্দ বিকৃত হ েয় যায়। বিকৃত তৎসম শব্দকেই অর্ধ-তৎসম শব্দ বলে।
যেমনঃ- কেষ্ট, নেমন্তন্ন, পেন্নাম

তদ্ভব শব্দ কাকে বলে?

সংস্কৃত ভাষার যেসব শব্দ প্রাকৃত ভাষার মাধ্যমে যথানিয়মে পরিবর্তিত হয়ে বাংলা ভাষায় এসেছে তাদের তদ্ভব শব্দ বলে। 
মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর মতে, ‘যেসব শব্দের মূল সংস্কৃত ভাষায় পাওয়া যায় কিন্তু ভাষার স্বাভাবিক বিবর্তন ধারায় প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে আধুনিক বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে, সেসব শব্দকে বলা হয় তদ্ভব শব্দ।’ ‘তৎ’ অর্থাৎ সংস্কৃত এবং ‘ভব’ বা উৎপন্ন বলে এ শব্দগুলোকে বলা হয় তদ্ভ শব্দ।
যেমনঃ- হাত, চাঁদ, চামার, পা, ধি, বাঁশি, মাছ, দুধ, ভাত, ডার, পাখি ইত্যাদি।
সংস্কৃত    প্রাকৃত        বাংলা
বৃদ্ধ        বুড্ডা             বুড়া
অদ্য        অজ্জ             আজ

দেশি শব্দ কাকে বলে?

যেসব শব্দ এদেশের আদিম অধিবাসী অনার্যদের  ভাষা থেকে বাংলায় স্থান পেয়েছে সেগুলোকে দেশি শব্দ বলা হয় । 
যেমনঃ- পেট, ঢেঁকি, ডোঙা, কুড়ি, ইত্যাদি
এদেশে আর্যরা আসার আগে কোল, ‍মুন্ডা, সাঁওতাল ইত্যাদি অনার্য জাতি বসবাস করত। আর্যদের প্রভা তাদের ওপর পড়লেও নিজেদের কিছু শব্দ তারা আর্যদের উপহার দিতে পেরেছিলেন। বাংলা ভাষার শতকরা দুটি শব্দ এ উৎস থেকে এসেছে বলে মনে করা হয়ে থাকে। দেশি শব্দের মধ্যে কিছু অনার্য  শব্দ রয়েছে এবং কিছু অজ্ঞাত মূল শব্দ রয়েছে, যাদের উৎস জানা যায়নি । বাংলার পূরবর্তী পৃাৃকৃত ভাষায় এগুলো প্রবেশ করে পরে পরিবর্তিত হয়ে বাংলায় এসেছে।
আরো পড়ৃনঃ সমাস কাকে বলে?

দেশি শব্দগুলো হলো

ঢাক, ঢোল, কুলা, ঢেঁকী, চাটাই, চুলা, ঝিঙ্গা, পোলা, কুড়ি, ইত্যাদি। আধুনি ভাষাতাত্ত্বিক গবেষণায়  এসব শব্দের কোনো কোনোটির উৎস আবৃষ্কিত হয়েছে। পণ্ডিতেরা বলেন–
চুলা> উনুন। এ শব্দটি মূলত মুণ্ডারি জাতির ভাষা ছিল।
কুড়ি> বিশ। কুড়ি শব্দটি মূলত ছিল  কোল জাতির ভাষা।
পোলা> ছেলে। ‘পোলা’ শব্দটি মূলত ব্যবহৃত হতো তামির ভাষায় । এরূপে ছাই , ঢিল, ঝোপ ইত্যাদি দেশি শব্দের উৎপত্তি নিয়ে পন্ডিতেরা গবেষণা করেছেন।

বিদেশি শব্দ কাকে বলে?

যেসব শব্দ বিদেশি ভাষা থেকে বাংলায় এসেছে সেগুলোকে বিদেশি ভাষা বলে।
যেমনঃ- চা, চিনি, চেয়ার, টেবিল, আনারস, পেয়ারা, লুঙ্গি, পেনসির, কলম, অফিস, রিক্সা, কিতাব  ইত্যাদি।
প্রাচীনকাল থেকে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও বাণিক্যিক কারণে ভিন্ন ভিন্ন ভাষাভাষী বিদেশি মানুস আমাদের দেশে েএসেছে।  এদেশের মানুষের সাথে ভাবের আদান প্রদান করেছে এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ এদেশের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গেছে।  এসব বিদেশাগত মানুষের মুখের ভাষার অনেক শব্দ বাংলা ভাসায় অনুপ্রবেশ করেছে এবং সেগুলো বাংলা ভাষার অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে পড়েছে। আককের বাংলা ভষায় এ রকম অনেক শব্দ ররয়েছে যেগুলোর মূল হচ্ছে আরবি, ফারসি ও ইংরেজি। এভাবে বার্মিজ, প্তুগীজ, তুর্কি, ফারসি, ওলন্দাজ প্রভৃতি ভাষার কিছু শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে। 
যেননঃ-

আরবী শব্দঃ

আল্লাহ, আলেম, ইনসান, ঈদ, উকিল, কিয়ামত, জাহান্নাম, কাগজ, কলম, আতর, আমিন, খবর, খেতাব, জমা, ইজ্জত, আদালত, তলব, হাকিম, হিসাব, ইত্যাদি।

ফারসি শব্দঃ

হুজুর, হিম্মত, খোদা, রুমাল, সরকার, আয়না, আসমান, চশমা, জমি, দরবার, আইন, জামা, আমদানি, নারিশ, কারখানা, বেহেশত, রসদ, দোকান, দৌলত দোযখ, ফেরেশতা, বুলবুল, বাগিচা, বাদশাহ ইত্যাদি।

তুর্কি শব্দঃ

দারোগা, বাবু, কোর্মা, চাকু, চাকর ইত্যাদি।

ইংরোজি শব্দঃ

অফিস, স্কুল, কলেজ, নম্বর, কোর্ট, চেয়ার, পকেট, টিকিট, পেনসিল, হাসপাতাল, পিন, ফুটবল ইত্যাদি।

পর্তুগিজ শব্দঃ

আনারস, আলকাতরা, পেয়ারা আলপিন, আলমারি, গুদাম, চাবি, পাদ্রি, বালতি, জানালা, তোয়লে, বোতাম, ফিতা, পাউরুটি, বারান্দা, সাবান, টুপি, তামাক, কেরানি, গির্জা।

চীনা শব্দঃ

চা, চিনি, লিচু, এলাচি ইত্যাদি।

ওলন্দাজ শব্দঃ

ইস্কাপন, টেককা, তুরূপ, রুইতন, হরতন ইত্যাদি।

জাপানি শব্দঃ

রিক্সা, হারিকিরি, সাম্পান, প্যাগোডা ইত্যাদি।

গুজরাটি শব্দঃ

হরতাল, খদ্দর ইত্যাদি।

পাঞ্জাবি শব্দঃ

চাহিদা, শিখ ইত্যাদি।

বর্মি শব্দঃ

ফুঙ্গি, লুঙ্গি, লামা, জামা, কিয়াং ইত্যাদি।

হিন্দি শব্দঃ

চানাচুর, পানি, টহল, বাচ্চা, বার্তা, পুরি, মিঠাই, কাহিনী, খানাপিনা, দাদা, নানা।

গ্রিক শব্দঃ

 দাম, কোণ, সেমাই, সুরঙ্গ, কেন্দ্র ইত্যাদি।

মিশ্র শব্দ ককে বলে?

বাংলা ভাষায় নানা জাতের শব্দের সমাবেশে এর ভান্ডা সমৃদ্ধ হয়েছ্ েবিভিন্ন শ্রেণি শব্দের সহযোগে এক ধরনের মিশ্র শব্দের নমুনা বাংলা ভাষায় পাওয়া যায় । এক শ্রেণির শব্দের সঙ্গে অন্য শ্রেণির শব্দ বা  প্রত্যয়ের মিলনে েএসব মিশ্র শব্দ তৈরি হয়েছ্। নিচে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত কছিু  শিশ্র শব্দের উদাহরণ দেওয়া হলো।

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত কিছু মিশ্র শব্দ

রাজা-বাদশা= তৎসম +ফারসি
শাকসবজি= তৎসম+ ফারসি
হাট-বাজার = বাংলা + ফারসি
হেড-মৌলভী =  ইংরেজি + ফারসি
ডাক্তারখানা = ইংরোজি + ফারসি
ডেড-পন্ডিত = ইংরেজি + তৎসম
খ্রিস্টাব্দ = ইংরেজি + তৎসম
পকেটমার = ইংরেজি + বাংলা
চৌহদ্দি = ফারসি + আরবি
বেটাইম = ফারসি + ইংরেজি

অর্থ অনুযায়ী বাংলা ভাষা শ্রেণিবিভাগঃ

শব্দের অর্থ অনুযায়ী বাংলা ভাষার শব্দসমূহকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা যায়:
১।  যৌগিক শব্দ।
২। রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ।
৩। যোগ রূঢ় শব্দ।

যৌগিক শব্দ কাকে বলে?

যেসব শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থ  এবং ব্যবহারিক অর্থ অভিন্ন তাদেরকে যৌগিক শব্দ বলে। 
যেমন:
ধণী: ধন আছে যার।
পাঠক: পাঠ করে 
যে এসব শব্দের বৃৎপত্তিগত অর্থ যা, ব্যবহারিক অর্থও তাই। সে কারণে এগুলো যৌগিক শব্দ।

রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ কাকে বলে?

যেসব শব্দ প্রকৃতি ও প্রত্যয় নিষ্পন্ন ব্দ প্রকৃতি ও প্রত্যয়ের অর্থের অনুগামী না হয়ে কোনো বিশেষ অর্থ বোঝায়, তাকে রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ বলে। 
যেমন: বাঁশ +ঈ = বাঁশী ( এখানে বাঁশ দ্বারা নির্মিত যে কোনো বস্তুকে না বুঝিয়ে বিশেষ বাদ্যযন্ত্রকে বোঝায়)
কুশল ( অর্থ- নিপুন, ব্যুৎপত্তিগত অর্থ – যে কুশ আহরণ করে)
শুশ্রূষা (অর্থ- রোগীর সেবা, ব্যুৎপত্তিগত অর্থ -শোনার ইচ্ছা)
সন্দেশ ( অর্থ – মিষ্টান্ন , ব্যুৎপত্তিগত অর্থ সমস্ত দেশ থেকে যা আসে অর্থাৎ খবর)
হরিন ( অর্থ – পশুবিশেষ, ব্যুৎপত্তিগত অর্থ যে হরণ করে) 
রাখাল ( অর্থ -যে গবাদি চরায়, ব্যুৎপত্তিগত অর্থ -যে রাখে বা রক্ষা করে)

যোগরুঢ় শব্দা কাকে বলে?

সমাস ষ্পিন্ন যেসব  শব্দ পূর্ণভাবে সমস্যমান পদসমূহের অর্থ না বুঝিয়ে  কোনো বিশিষ্ট অর্থ প্রকাশ করে তাদেরকে যোগরূঢ় শব্দ বলে।
যেমনঃ 
মহাযাত্রা = মহাসমারোহ যাত্রা। কিন্তু এর ব্যবহারিক অর্থ হেচ্ছ ‘মৃত্যু’। 
আরও উদাহরণ – সরোজ (ব্যুৎপত্তি অর্থ – যা সরোবরে জন্মে; ব্যবহারিক অর্থ ‘পদ্ম’) 
জলদ ( ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ‘ যা জল দেয়’, ব্যবহারিক অর্থ ‘মেঘ’)
অসুখ (ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ‘ সুখের অভাব’, ব্যবহারিক অর্থ  ’রোগ’’)
সুহৃদ (ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ‘ সুন্দর হৃদয় যার, ব্যবহারিক অর্থ বন্ধু)

গঠন অনুযায়ী শব্দের প্রকারভেদঃ

গঠন অনুযায়ী বাংলা ভাষার শব্দসমূহকের দুটো ভঅগে বিভক্ত করা  হয়েছে। 
১। মৌলিক শব্দ
২। সাধিত শব্দ।

মৌলিক শব্দ কাকে বলে?

যেসব শব্দ বিশ্লেষণ করলে ভাঙা যায় না, সেগুলোকে মৌলিক শব্দ বলে। মৌলিক শব্দ হচ্ছে ভাষার মূর  উপকরণ। এগুলো বিচার বিশ্লেষণ সাপেক্ষ। আবার অন্য কোনো প্রতিশব্দের সাহায্যে এদের অর্থকে বোঝানো যায় না, এরা হচ্ছে স্বয়ংসিদ্ধ শব্দ। তবে ব্যাখ্যা এবং উদাহরণের সাহয্যে শব্দটি বোঝানো যায় বটে কিন্ত সঠিক ধারণা দেয়া যায় না । যেমন- ‘ঘর’ একটি শব্দ। কিন্তু এর প্রতিশব্দ দেয়া কঠিন । ব্যাখ্যা ও উদাহরণ দিয়ে শব্দটি বোঝানো যায়  তবে এর সঠিক ধারণা দেয়া কঠিন। তেমনিভাবে হাত, মাটি, গোলাপ, ঢাককা, বাড় ইত্যাদি।

সাধত শব্দ কাকে বলে?

ধাতু বা মৌলিক শব্দের সাথে প্রত্যয়, উপসর্গ যুক্ত হয়ে অথবা সমাস নিষ্পন্ন হয়ে যে শব্দ গঠিত হয়, তাকে সাধিত শব্দ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, ভাষার যেসব শব্দকে ভাঙা যায় এবং ভাঙা অংশের অর্থ থাকে সাধিত শব্দ বলে। 
যেমনঃ পাঠক, (পঠ + অক)
দেশান্তর , (অন্য দেশ),
সাংবাদিক, ( সংবাদ + ইক) ইত্যাদি।
সাধিত শব্দ সার্থকভাবে ভাঙা বা বিশ্লেষণ করা যায়। তার ভাঙা অংশও পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করে। এই বিভাজ্য শব্দই সাধিত শব্দ।  সাধিত শব্দ প্রকৃতি ও প্রত্যয়যোগে গঠিত হতে পারে, আবার সমাসের সাহায্যেও গঠিত হয়।

শব্দ থেকে বিগত বিভিন্ন পরীক্ষায় আসা কিছু কমন প্রশ্ন 

১্। দেশী ও তৎসম শব্দের মিশ্রণকে কি বলে?
ক. বাহুল্য দোষ
খ. গুরুচণ্ডালী দোষ
গ. দুর্বোধ্যতা
ঘ. উপমা ভুল প্রয়োগ
উত্তরঃ গুরুচণ্ডালী দোষ
২।নিচরে কোনটি তৎসম শব্দ?
ক. চাঁদ
খ. ভবন
গ. বালতি
ঘ.হরতাল
উত্তরঃ  ভবন
৩। কোনটি দেশী শব্দ?
ক. গিন্নি
খ. কৃপণ
গ. টোপর
ঘ. মাথা
উত্তরঃ টোপর।
৪। ’পাউরুটি ’ কোনা ভাষার শব্দ?
ক. পাঞ্জাবী
খ. সংস্কৃত
গ. পর্তুগীজ
ঘ.ফরাসি 
উত্তরঃ পর্তুগীজ
৫। নিচের কোনটি অর্ধতৎসম শব্দ?
ক. কুচ্ছিত
খ. ভবন
গ. পাত্র
ঘ. গৃহিণী
উত্তরঃ কুচ্ছিত
৬। নিচের কোনটি অর্ধতৎসম শব্দ?
ক. গিন্নী
খ. হস্ত
গ. গঞ্জ
ঘ. তসবি
উত্তরঃ গিন্নী
৭। পর্তুগীজ ভাষার শব্দ নয় কোনটি?
ক. আনারস
খ. আলমারি
গ. গুদাম
ঘ. চাহিদা
উত্তরঃ চাহিদা।
৮। নিচের কোনটি পারিভাষিক শব্দ?
ক. ডাব
খ. সচিব
গ. কু্চ্ছিত
ঘ. বালতি 
উত্তরঃ সচিব
৯.রেস্তোরা কোন ভাষার শব্দ?
ক. ওলন্দাজ
খ. জাপানি
গ. ফরাসি
ঘ. উঙরেজি 
উত্তরঃ ফরাসি।
১০। ব্যকরণ কোন ভাষার শব্দ?
ক. বাংলা
খ. সংস্কৃত
গ. পর্তুগীজ
ঘ. হিন্দী
উত্তরঃ সংস্কৃত ।
১১।হরতাল কোন ভাষার শব্দ?
ক. পাঞ্জাবী
খ. হিন্দী
গ. জাপানি
ঘ. গুজরাটি
উত্তরঃ  গুজরাটি ।
১২। কোন ধরণের শব্দে কখনো মূর্ধন্য -ণ হবে না?
ক. তৎসম
খ. বিদেশী
গ. তদ্ভব
ঘ. আঞ্চলিক
উত্তরঃ  বিদেশী
১৩। কোনটি অর্থ তৎসম শব্দের উদাহরণ?
ক. মাথা
খ. ঢেঁকি
গ. ভবন
ঘ. কু্চ্ছিত
উত্তরঃ কুচ্ছিত
১৪।গিন্নী, কেষ্ট  শব্দ দুটি  কোন ধরনের শব্দ?
ক. তৎসম 
খ. অর্ধতৎসম
গ. দেশি
ঘ. বিদেশী
উত্তরঃ অর্ধ -তৎসম 
১৫। পেয়ারা কোন ভাষা থেকে আগত?
ক. হিন্দী
খ. উর্দু
গ. পর্তুগীজ
ঘ. গ্রীক
উত্তরঃ পর্তুগীজ
১৫। আদিম অধিবাসী অনার্যদের ভাষা ও সংস্কৃতির যে কিছু শব্দ বাংলা ভাষায় রক্ষিত আছে, সেগুলোকে বলে-
ক. তদ্ভব শব্দ
খ. দেশি শব্দ
গ. তৎসম শব্দ
ঘ. বিদেশি শব্দ
উত্তরঃ দেশি শব্দ। 
১৬। কোনটি তৎসম শব্দ?
ক. চা
খ. চেয়ার
গ. ধর্ম
ঘ. কান
উত্তরঃ ধর্ম। 
১৭। খাটি বাংলা শব্দ নয় কোনটি?
ক. বাদুর
খ. ঢোল
গ. ডিঙ্গি
ঘ. কুত্তা
উত্তরঃ ঢোল 
১৮। কোনটি বিদেশি শব্দ?
ক. হাত
খ. ডাগর
গ. হায়াত
ঘ. নাগর
উত্তরঃ হায়াত 
১৯।রিকশা শব্দটি উৎপত্তি হয়েছে কোন ভাষা থেকে?
ক. ইংরেজি
খ. হিন্দী 
গ. চীনা
ঘ. জাপানি
উত্তরঃ জাপানি 
২০। চানাচুর শব্দটি এসেছে কোন ভাষা থেকে?
ক. চীনা
খ. হিন্দি
গ. ফরাসি
ঘ. ওলন্দাজ
উত্তরঃ হিন্দি 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button