মানপত্র লেখার নমুনা | মানপত্র লেখার নিয়ম |- snigdhasokal.com

মানপত্র লেখার নমুনা বা মানপত্র লেখার নিয়ম

১। তোমার শিক্ষকের বিদায় উপলক্ষে একটি বিদায়ী অভিনন্দন পত্র রচনা কর।
লক্ষ্মীপুর আলিয়া মাদরাসার বাংলা বিভাগের প্রধান প্রভাষক মুহম্মদ আবদুল লতিফের বিদায় উপলক্ষে শ্রদ্ধার্ঘ্য

মানপত্র লেখার নমুনা | মানপত্র লেখার নিয়ম  |- snigdhasokal.com


মুহতারাম!
আপনি আজ আমাদের নিকট হতে বিদায় গ্রহণ করেছেন – এ কথা ভেবে আমরা অন্তরে গ০ভীর বেদনাবেআধ করছি। এত তাড়াতাড়ি যে আপনি আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন তা আমরা ভাবতেও পরিনি। কিন্তু সব্‌ িমহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইচ্ছা-
 ‘এ অনন্ত চরাচরে স্বর্গমর্ত্য ছেয়ে
সবচেয়ে পুরাতন কথ, সবচেয়ে
গভীর ক্রন্দন, যেতে নাহি দিব হায়,
তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়।
হে জ্ঞানী!
আপনার প্রভূত পজ্ঞা, জ্ঞান, আদর্শ চেতনা ও অভিজ্ঞতা আমাদেরকে দিয়েছে নতুন জগতের সন্ধান। আপনার সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও চরিত্রমাধুর্য আমাদের করেছে মুগ্ধ। আপনাকে হারতে হবে  একথা ভেবে আমরা আজ দিশেহারা, অসহায়। তবুও আপনি গ্রহন করু আমাদের বিদায়ী শ্রদ্ধাঞ্জলি।
হে বিদায়ী অতিথি!
আজ আপনার বিদায়লগ্নে মরে পড়ছে কত শত কথা, কত সময় আমরা রূঢ় আচার-আচরণ দ্বারা আপনার অসন্তোষের কারণ হয়েছি। আমাদের যাবতীয় ভুল -ত্রুটি ক্ষমা করবেন, দোয়া করবেন যেন জীবনে মহৎ হতে  পারি। তাই কবিতার ভাসায় বলতে চাই-
অপরাধীর অপরাধ যদি হয়, পর্বত প্রমাণ
ক্ষমাশীলের ক্ষমা হয় আকাশ সমান।
পরিশেষে বিমূঢ় চিত্তে বলতে হয়, আমাদের মনোজগতে যে পূত দীপশিখা আপনি জ্বেলে দিয়েছেন,, তাতে আমাদের  স্মৃতির বাসরে  আপনি চির জাগরূক থাকবেন। মহান রাব্বুল আলামনের দরবারে মুনাজাত করছি, আপনার ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর ও মঙ্গলময় হোক।
ইতি
আপনার স্নেহধন্য ছাত্রবৃন্দ
লক্ষ্মীপুর দারূল উলূম আলিয়া মাদ্রাসা
লক্ষ্মীপুর
তারিখ:——————
২। তোমার মাদরাসায় আলিম পরীক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে একখানা বিদায় অভিনন্দন পত্র রচনা কর।
ঐতিহ্যবাহী মিছবাহুল উলুম কামিল মাদরাসার ২০২২ সালের আলিম পরীক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রীদের বিদায় উপলক্ষে অশ্রুসিক্ত উচ্চারণ
কবির ভাষায়-

উড়ে এসেছিলাম ইলমে হাদীসের গুল বাগিচায়
আমরা পথভোলা বুলবুল।
উড়ে যাই  আবার জীবন – সংগ্রাম নীড়ে
আশঙ্কা বেদনায় হৃদয় – ভাঙা ব্যাকুল্
হে বিদায়ী বন্ধুরা!
চমৎকার সুন্দর নীলচে আকাশে শারদীয় মেঘ, শিউলিঝরা প্রভাত আর কুয়াশার শুচি – শুভ্র উত্তরীয় প্রকৃতি যখন অনিন্দ্য সুন্দর, তখন শেষ হয়ে এলো তোমাদের জীবনের শিক্ষাকাল। তোমাদের বিদায় রাগিণীতে  আমাদের মনের সোনালি আকাশ ছেয়ে গেছে বিষাদের ঘনঘটায়।
হে শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ!
আলিম ইতিহাসের যুগ সন্ধিক্ষণের নব-চেতনা ও রেনেরসাঁর প্রতিশ্রুতি নিয়ে দু’শতাধিক বছর পূর্বের ঐতিহাসিক যাত্রালগ্ন থেকে জ্ঞান  পিয়াসী কত না মনীষী, সুধী-জ্ঞানী-গুণী দিয়েছে বিদায় তোমার এই অনন্ত সুবাসিত কুসুম কানন হতে । পঞ্চদশ হিজরীরর ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ  উত্তাল সিন্ধু মাঝে আমরাও আজ রিক্ত হস্তে দিচ্ছি পাড়ি মহাকালের যাত্রাপথে। তাই আমরা আজ আশাঙ্কিত, কিংকর্তব্যবিমূঢ়, কিন্তু দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ – জ্বালিয়ে দেব সকল অপকর্মের আস্তানা, প্রতিষ্ঠা করব ‘হেরার রাজ’  তোমার দেয়া পথনির্দেশনায়।
হে আসতিযায়ে কিরাম!
এ ঐতিহ্যবাহী শিক্ষায়তনের তোমরা – শ্রেষ্ঠ, কাল বরেণ্য ওস্তাদ। তোমাদের অকুন্ঠিত বিচ্ছুরিত আলো দিশায় আমাদের মন- মঞ্জুষা উদ্ভাসিত, আমরা আজ  গৌরবান্বিত। তোমাদের এ ঋণ কী দিয়ে শোধরাব? তদুপরি বিষাক্ত আবহাওয়ার অঙ্কুরিত সন্তানেরা অবাঞ্চিত আচরণে দিয়েছি বেদনার ডালি। তবু সব ভুলে বিদায়লগ্নে দোয়া দেবে জানি।
হে বিদায়ী অগ্রজবৃন্দ!
বেদনাবিধুর এ বিদায় বেলায় আমাদের মনে পড়ছে বিগত দিনের অফুরন্ত স্মৃতি। সুদীর্ঘ সময়ে তোমাদের সাথে আমাদের হৃদ্যতার যে নিবিড় সম্পর্কের গ্রন্থি রচিত হয়েছিল, তা আজ ছিন্ন করে আমাদেরকে ক্ষত-বিক্ষত করে তোমরা চলে যাচ্ছ। তবু শিক্ষার এ ক্ষুদ্রতর সীমার বাঁধন পেরিয়ে উচ্চতর েএ শিক্ষাজীবনের যাত্রা করছ ভেবে আমাদের মনে বেদনার মাঝেও কিছুটা আনন্দের ধারা বহমান।
হে সুহৃদ বন্ধুগণ!
জানি, তোমাদের যথাযথ সম্মান আমরা দিতে পরিনি।ভ অনেক সময় আমাদের অবুঝ যুক্তি-তর্ক, আচার-ব্যবহারে তোমরা মনঃক্ষুন্ন হয়েছে। আজ এ বিদায়লগ্নে করজোড় তোমাদের আকাশসম হৃদয়ের কাছে আমরা ক্ষমার মঞ্চে দাড়িয়ে  অপেক্ষা করছি। আশা করি ক্ষমা করে দেবে।
হে অন্তর্যামী!
আমাদের পথচলা বিদ্যার্জন সমর্পিত হোক তোমারই রাহে। জীবন-চলার পথে সমাগত পরীক্ষায় তুমি  তোমার বান্দার জন্য নির্ধারিত  কর গৌরবোজ্জল স্থান। পূর্ণ কর মনের সকল নেক বাসনা।
তোমাদের স্নেহমুগ্ধ
মিছবাহুল উলুম আলিম কামিল মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থীবৃন্দ
তারিখ:————-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button