ভাবসম্প্রসারণ: অহংকার পতনের মূল – www.snigdhasokal.com

অহংকার পতনের মূল

অহংকার পতনের মূল
অহংকার পতনের মূল
মূলভাব: যে অপরকে তুচ্ছ মনে করে, নিজেকে ক্ষমতাশালী ও ঐশ্বর্যশালী মনে করে তার পতন অনিবার্য।
সম্প্রসারিত ভাব: নিজের ঐশ্বর্য, শক্তি ও বংশ মর্যাদা নিয়ে যারা বাহাদুরি করে তাদের এ বাহাদুরি একদিন বিলীন হয়ে যায়। অহংকার যে পতনের মূল এ কথা তারা কখনো ভেবে দেখে না। তারা ঐশ্বর্যের অন্তরালে নিজেকে হারিয়ে ফেলে, তাদের অত্যাচার নিপীড়নে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে সঙ্গবদ্ধ হয় এর প্রতিকারের জন্য। সম্মিলিতভাবে তাদের প্রতিঘাত হানে। এ আঘাতে অহংকারের দম্ভ চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায়। অহঙকারীকে কেউ পছন্দ করে না। এমনকি বিধাতাও অহংকারীকে ঘৃণা করে। সুতরাং অহংকার বর্জন করে নম্র ও বিনয়ী হওয়া উচিত। বিনয় ও নম্রতা চরিত্রের অন্যতম ভূষণ।
অহংকার এমন এক আবরণ, যা মানুষের সকল মহত্ত্বকে আবৃত করে ফেলে
মানুষের সকল মনবীয় গুণের সমন্বিত বহিঃপ্রকাশই মহত্ব। এমন মানবীয় গুনবলি দিয়েই মানুষ অন্যান্য প্রাণী থেকে নিজেকে আলাদা করেছে, হয়েছে সৃষ্টির সেরা জীব। মহৎ মানুষেরা আত্মকেন্দ্রিক না হয়ে, দেশ ও দশের কল্যাণে আত্মোৎসর্গ করেন। তাাঁরা সকল প্রকার হীনতা, দীনতা, সংকীর্ণতা, স্বর্থপরতা ও অহংকার থেকে মুক্ত থাকে। তাঁরা সব সময় দেশ , জাতি ও সমাজকে নিয়ে চিন্তা করেন, নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যান। তাঁরা আলোকিত হৃদয়ের অধিকারী, যে আলোয় জাত পথ খুপে পায় । হাজী মুহাম্মদ মহসীন, দেশবন্ধু ত্তিরঞ্চন দাশ বেগম রোকেয়া প্রমুখ মনীষীগণ মহত্ত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। মহৎ মানুষরা সব সময় চিন্তা করেন কিভাবে মানুষকে প্রকৃত মানুষ করা যায়। তার বিনয়ের ধারক ও বাহক্ কখনোই তার নিজের ধন দৌলত, বিদ্যা-বুদ্ধি নিয়ে অহংকার করেন না। এটি মানুষক সদুপদেশ গ্রহণ করা থেকে বিরত রাখে। অহংকারী ব্যক্তি নিজের টাকা, যশ, খ্যাতি, জ্ঞান নিয়ে এতটাই গর্বিত হোন যে মানুষ হয়েও তার মাটিতে আর পা পড়ের না। সে যত বড় পন্ডিত, জ্ঞানী -গুনী, ধনী-দাতা, বীর হোক না কেন, তাকে সমাজের কেউ ভালোবাসে না। বরং মানুষ একজন অহংকারীকে অনেক বেশি ঘৃণা করে। অহংকার মানুষকে ধ্বংসাত্মক কাজেও লিপ্ত হতে প্ররোচিত করে। সেই সাথে কালে পরিক্রমায় অহংকার দরিদ্রতাও ডেকে আনে । ফলে অহংকারে আবরণে ব্যক্তির সব মহত্ত্ব ঢাকা পড়ে যায়। কবি ইশ্বরচন্দ্র গুপ্ত বলেন- ‘তুমি পর্বততুল্য উচ্চ হইলে গর্ব দোষে খর্ব হইবে, ইহা বিচিত্র নহে।’
মন্তব্য: অহংকার পরিত্যাগের মাধ্যমেই মানুষের মহত্ত্ব বিকশিত হয়। অহংকার ও দাম্ভিকতা জগতশ্রেষ্ঠ হওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বাঁধা। মানব চরিত্রের এই নেতিবাচক গুণটি সর্বদািই পরিত্যাজ্য।

Related Articles

6 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button