প্রবন্ধ রচনা লেখার নিয়ম – snigdhasokal.com
প্রবন্ধ রচনা লেখার নিয়ম
সংজ্ঞা:
রচনা , শব্দটির অর্থ – সৃষ্টি, নির্মাণ; কাব্য রচনা, গল্প রচনা, প্রবন্ধ রচনা। যে লেখায় নতুন কিছু পরিস্ফুট হয়, তার না রচনা। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে একটা বিশেষ অর্থে এই শব্দটির প্রযোজ্য হয়, তখন তার অর্থ Essay বা প্রবন্ধ। ওই ইংরেজি শব্দটির মূলগত অর্থ ‘প্রয়াস’, অর্থাৎ প্রকাশ-প্রচেষ্টা। ছাত্র-ছাত্রীর বেলায় সেই অর্থ একটু বিশিস্টতর- নিজেদের লেখার চেষ্টা কোন বিশেষ বিষয়ে তাদের নিজ-নিজ ভাবনা নিজ নিজ ভাষায় প্রকাশ করা। এমনকি ইংরেজি Comopsition বলতে যা বোঝায় তা ‘রচনার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।ক তবে ‘কম্পোজিশন’ অর্থে লেখা বা লিখন শব্দটি প্রয়োগ করাও চলে- ‘এসে’ Essay বলতে প্রবন্ধ রচনা।
প্রবন্ধের অঙ্গ বিভাজন:
সাধারণত প্রবন্ধের তিনটি অংশ যথা-
১. ভূমিকা।
২. মূল অংশ।
৩. উপসংহার।
রচনার ভূমিকা বলতে যা বোঝায়ঃ
রচনার মূল অংশ বলতে যা বোঝায়ঃ
রচনার উপসংহার বলতে যা বোঝায়ঃ
প্রবন্ধ লেখার সময় আপনার যা যা পালন করতে হবেঃ
- সহজে বোঝা যায় এমনভাবে প্রবন্ধ লিখতে হবে।
- সাধু সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল হতে হবে।
- ব্যকরণগত কোনো ভুল যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- প্রয়োজনে উদাহরণ উপস্থাপন করতে হবে।
- বানানের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।
প্রবন্ধের প্রকারভেদঃ
- চিন্তাশ্রিত প্রবন্ধ
- ভাবাশ্রিত প্রবন্ধ
- বিবৃতিমূলক প্রবন্ধ।
- ব্যাখ্যামূলক প্রবন্ধ।
- বর্ণনামূলক প্রবন্ধ।
- তত্ত্বমূলক প্রবন্ধ
- ভাবমূলক প্রবন্ধ
- তথ্যমূলক প্রবন্ধ
প্রবন্ধ লেখার সংকেত সমূহঃ
১. প্রাণী সম্পর্কে –
- সূচনা
- বর্ণনা
- প্রকারভেদ
- প্রাপ্তিস্থান
- খাদ্য
- স্বভাব – প্রকৃতি
- উপকারিতা
- উপসংহার
২. স্থান সম্পর্কে –
- অবস্থান ও আয়তন
- ঐতিহাসিক পটভূমি
- জনসংখ্যা
- বিশেষত্ব
- পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা
- উৎপন্ন দ্রব্যাদি
- শিক্ষার উপায়
- ব্যবসা – বাণিজ্য
- উপসংহার
৩. বস্তু সম্পর্কে –
- ভূমিকা
- পরিচিতি
- রং, আকার ও আয়তন
- প্রাপ্তিস্থান বা কোথায় পাওয়া যায়?
- কিসের তৈরি?
- উপকারিতা
- কিভাবে উৎপাদন ও প্রস্তুত করা হয়
- আমদানি- রপ্তানিি
- উপসংহার
৪. ঘটনা সম্পর্কে –
- সূচনা
- বর্ণনা
- উপসংহার
৫. জীবনচরিত সম্পর্কে –
- জন্ম ও বংশ পরিচয়
- বাল্যজীবন ও শিক্ষা
- জীবনের কাজ
- চরিত্র
- মৃত্যু
- উপসংহার
প্রবন্ধ রচনায় দক্ষতা অর্জনের উপায়ঃ
- প্রবন্ধের বক্তব্য বাস্তব তথ্য – প্রমাণের ভিত্তিতে এবং যৌক্তিক পরম্পরায় উপস্থাপিত ও সন্নিবেশিত হওয়া উচিত – যেন তা স্পষ্ট সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ায় সহায়ক হয়।
- প্রবন্ধের বিষয় অনুযায়ী যুক্তি, মনন, তথ্য বা তত্ত্বের পরিমাণ নির্ণীত হয়। পরিমাণতিরিক্ত বাহুল্য উৎকৃষ্ট রচনার পরিপন্থি। অনুশীলনের দ্বারা রচয়িতাকে এই পরিমিতিবোধ অধিগত করতে হয়।
- প্রবন্ধ লেখার দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রচুর প্রবন্ধ পড়তে হয়। আর এজন্য পত্র – পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ, সংবাদ, প্রতিবেদন, ভাষণ ই্ত্যাদি নিয়মিত পাঠ করলে নানা প্রসঙ্গে বিষয়গত ধারণা ও শব্দভাণ্ডার বাড়ে। ফলে সহজেই কোনো বিষয়ে প্রবন্ধঘ লেখা যায়।
- ভাষারীতির ক্ষেত্রে সাধু ও চলিতের মধ্যে যে কোনো একটি নির্বাচন করতে হয়। ভাষারীতি বিষয়ানুগ হওয়াই বাঞ্চনীয়। আধুনিক বাংলায় যেহেতু চলিত রীতিরই জয়জয়কার সেজন্য জলিত রীতি অবলম্বন করে পবন্ধ লেখার চর্চা করা ভালো। সাধু- চলিতের মিশ্রণ অবশ্যই পরিত্যাজ্য
- প্রবন্ধে যুক্তি প্র্রদর্শন কিংবা প্রমাণ প্রতিষ্ঠার জ্য অন্য রচনা থেকে উদ্ধৃতির অবকাশ আছে, তবে সে ক্ষেত্রেও লক্ষ রাখতে হয় প্রয়োজনীয় পরিমাপের দিকে। ঘন ঘন ও বড় বড় উদ্ধৃতি প্রবন্ধের স্বাভাবিক প্রকাশকে ব্যাহত করে।
- উন্নতমানের প্রবন্ধে নির্ভুল বানান ও নির্ভুল বাক্যগঠন অপিহার্য শর্ত। শিক্ষার্থীকে এ বিষয়ে যত্নবান হতে হবে।