নাম মানুষকে বড় করে না ,মানুষই নামকে বড় করে তোলে ।
ভাব সম্প্রসারণ : নাম দ্বারা মানুষ খ্যাতি লাভ করতে পারে না ,বরং মহৎ কাযাবলির মাধ্যমেই মানুষ বিখ্যাত হয়ে ওঠে ।মানুষের কীর্তিকলাপের মাধ্যমেই তার জীবনের গৌরব ঘোষিথ হয় ।তার সুনামের জন্যে তার নিজের জীবনের অবদানই বিচায ।
সীমাবদ্ধ জীবনের অবসান ঘটিয়ে মানুষকে এ পৃথিব থেকে বিদায় নিতে হয় ।পেছনে পড়ে থাকে তার কর্মময় জীবন ।এ পৃথিবীতে যত সুন্দর নামই তার থাকুক না কেন ,পৃথিবীতে সুন্দর নামের কোনো মূল্য নেই –মূল্য হয় তার সুন্দর কর্মের ।কৃতকর্মের জন্যেই কারো কারো নাম পায় মহিমা,উওম –পুরুষের কাছে হয় স্মরণীয় ।মহৎকর্মের জন্যেই তারা এই পৃথিবীতে অমর হয়ে থাকে ।এমন ব্যক্তিই মানবসমারজ ধন্য বলে বিবেচিত ।গৌরবজনক কীর্তিতেই মানুষের পরিচয় ।যার কোনো কীর্তি নেই তার কথা কেউ স্মরণ করে না ।মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী থেকে তার নাম বিলীন হয়ে যায় ।পৃথিবীর জ্ঞানী ও গুণী ব্যক্তিগন তাঁদের গৌরবজনক কীর্তির জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন ।নামের জন্যে নয় ,কর্মের জন্যেই তাঁরা বিখ্যাত হয়েছেন ।কোনো সদ্য জন্নগ্রহনকারী শিশুর নামের সঙ্গে যদি কোনো বিখ্যাত ব্যক্তির নামের অংশ জুড়ে দেয়া হয় ,তাহলে ওই শিশু যে একজন মহান ব্যক্তিত্বে পরিণত হবে তা নয় ।সুতরাং এ কথা নিঃসন্দেহে বলা চলে ,নামের জন্য মানুষ খ্যাতি লাভ করে না ,বরং মহৎ কাজের জন্যই মানুষের নাম বিখ্যাত হয়ে ওঠে ।বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ‘ঠাকুর’ পরিবারে জন্নগ্রহণ করেছেন এবং ওই পরিবারের সকলকে ছাপিযে বড় হয়ে উঠেছে তার নাম ।তাঁর আসনে অন্য কেউ বসতে পারেনি ।তাঁর কৃতকর্মই তাঁকে মানুষের হৃদয়-কোঠায় স্থান করে দিয়েছে ।আবার জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম সাধারণ পরিবারে জন্নগ্রহণ করেও কর্মের মাধ্যমে চির জাগরুক হয়ে আছেন আমাদের হৃদয়ের মণিকোঠায় ।
মানব জীবনে নামের কোনো ভূমিকা নেই ।মানুষ তার কর্মের দ্বারা নামকে বড় করে তোলে ।মহৎ কর্মের মাধ্যমে মানুষ যখন অপর মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকে তখন তার জীবন হয় সার্থক ।
নাম মানুষকে বড় করে না ,মানুষই নামকে বড় করে তোলে ।
ভাব সম্প্রসারণ : নাম পৃথিবীতে মানুষকে খ্যাতিমান বা গৌরবন্বিত করে তুলতে পারে না ;বরং মানুষই তার মহৎ কর্মের দ্বারা নামকে বড় করে তোলে ।তাই নামের নয়,কর্মেই মানুষের আসল পরিচয় নিহিত ।পৃথিবীতে সব পরিচিত বস্তু ও ব্যক্তিরাই একেকটা নাম থাকে ।অনেক সময় ব্যক্তি বা বস্তুর অর্থসহ ও তাৎপযপূর্ন নাম রাখা হয ।কিন্তু ব্যক্তি বা বস্তু যদি তার গুনাগুন ও স্বভাবের দ্বারা তাৎপয –অর্জনে ব্যর্থ হয় তাহলে তাৎপযপূর্ণ ও অর্থবহ নামের কোনো মুল্য নেই ।আবার সাদামাটা নামের অধিকারী কোনো ব্যক্তি বা বস্তু তার স্বভাব ও গুণাগুণের দ্বারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা বস্তুতে পরিণত হতে পারে ।তাই তো জগদ্বিখ্যাত নাট্যকার ও দার্শনিক শেক্সপিয়র বলেছিলেন ,‘নামে কী আসে যায়; গোলাপকে যে নামেই ডাকা হোক না কেন ,সে তার গন্ধ ছড়াবেই ।’ অর্থাৎ গোলাপের নাম যদি গোলাপ না হয়ে অন্য কিছু হতো তাহলে সে তার সৌন্দয সৌরভ ছড়াতে সক্ষম হতো ।আবার গোলাপ যদি তার সৌন্দয ও সৌরভ ছড়াতে সক্ষম না হতো তাহলে আরও সুন্দর কিংবা তাৎপযপূর্ণ নামও তাকে গুরুত্বপূর্ণ বস্তুতে পরিণত করতে পারতে না ।আমাদের সমাজে অনেকের ধারণ যে ,নামই মানুষকে খ্যাতিমান ও গৌরবান্তিত করে তোলে; কিন্তু এ ধারণা একবারেই ভুল ।যেমন-আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরূল ইসলাম দারিদ্যের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছিলেন ।কিন্তু দারিদ্র্যকে পদানত করে নিজের শ্রেষ্ঠা ক,সাধনা ও পরিশ্রমের দ্বারা তিনি বাংলা সাহিত্য শ্রেষ্ঠ আসন করে নিয়েছিলেন । কিন্তু তার নাম নজরুল ইসলাম না হয়ে অন্য কিছু হলে ও অনুরূপ অধিকারী হতে সে নাম কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারত না ।পৃথিবীতে নজরুল ইসলাম নামের অনেক লোকই জন্ন নিয়েছেন ।কিন্তু তাদের অনেকেই জগদ্বাসীর মনে স্থায়ী আসন করে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন ।তেমনি পৃথিবীতে ইতিহাসে বহু মনীষী কেবল তাঁদের কৃতকর্মের দ্বারা চিরঅমর হয়ে আছেন ।চেষ্টা,সাধনা ,পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের দ্বারা মানুষকে নিজের জীবন অর্থবহ করে তুলতে হবে ।তাহলে নামের খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে ।অন্যথায় সুন্দর ও তাৎপযপূর্ণ নামও কোনো কাজে আসবে না ।