দুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য -snigdhasokal
দুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য ।সর্পের মস্তকে না থাকলেও তাহা কি ভয়ংকর নহে?
ভাব –সম্প্রসারণ: দুর্জন শব্দের আভিধানিক অর্থ দুষ্ট ,দুরাত্না ,দুর্বৃও,খারাপ লোক ইত্যাদি ।আর বিদ্বান হলো পন্ডিত ,সুশিক্ষিত ,জ্ঞানী ইত্যাদি ।দুর্জন বিদ্বান হলেও নিন্দনীয় এবং এরূপ ব্যক্তির সঙ্গ বর্জণীয় ।দুষ্ট লোক দেশ ও সমাজের শএু ।তারা শিক্ষিত হলেও লোকে তাদের ঘৃণা করে ।
মানুষ যে সমাজের ওপর নির্ভর করে জীবনযাপন করে সে –সমাজে আছে নানা ধরনের লোক –জ্ঞানী –মূর্খ,ভালো-মন্দ,সৎ-অসৎ নানারকম মানুষের সমাবেশ সেখানে ।সঙ্গ নির্বাচনে একমিএ বিবেচনা দিক হলো গুনবানের বৈশিষ্ট্য-যার সহায়তা জীবন হযে ওঠে উজ্জ্বল ।সেখানে দুর্জন বা চরিএহীন ব্যক্তির অনুপ্রবেশের কোন সুযোগ নেই ।মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ তার চরিএ ।ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে ,`The crown and glory of life is character .’চরিত্রের গুণেই মানুষ শ্রেষ্টত্বের মযাদা পায় ।এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ঠিক রেখে অপরাপর বৈশিষ্ট্যের ঘটানো আবশ্যক ।অপরপক্ষে ,বিদ্যা মানবজীবনের অমূল্য সম্পদ ।বিদ্যার হিরণ্নীয় দীপ্তিচ্ছটায় মানুষ হয়ে ওঠে মহীয়ান ।বিদ্বান সর্বএ মযাদাবান এবং সম্মানের পাএ ।কিন্তু এই বিদ্বান যদি চরিএবান না হন ,তাহলে সবই ব্যর্থতায় পযবসিত হয় ।কারণ মন্দ স্বভাব তার সব গুণকে ম্লান করে দেয় ।মনুষ্যত্ব-বিরোধী কুপ্রবৃওিগুলো দুর্জন লোকের নিত্যসঙ্গী । এই ধরণের ব্যক্তির নৈতিক চরিএ দুর্বল ,ব্যবহারে এরা রূঢ় চিন্তায় তরল ।দেশ,সমাজ ,জাতি কেউ এদের দ্বারা উপকৃত হয় না ।এরা সমাজের কলঙ্ক ।চরিএ বিদ্যা অপেক্ষা অধিক মূল্যবান ।তাই সচ্চরিএ ব্যক্তি মূর্খ হলে ও তার সংস্পর্শ উপকারী ,জ্ঞানার্জনের জন্যে চরিএহীন জ্ঞানী ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া কোনোক্রমেই ঠিক নয় ।কারণ দুর্জনের সাহচযে নিষ্কলুষ চরিএ কুলষিত হতে পারে ।দুর্জন ব্যক্তি বিদ্যা –বুদ্ধিতে মহাপন্ডিত বলে খ্যাতিমান হলেও সবার উচিত তার সঙ্গে পরিহার করা ।কারণ চরিএহীনের বিদ্যা-বুদ্ধি কারো কোনো কাজ আসে না ।তাছাড়া এরা শিক্ষিত হয়ে আরো ভয়ংঙ্কর হয়ে ওঠে ।চাতুরী ও চলনায় আরো কূটকৌশলী এরা সহজ –সরল মানুষকে প্রতারিত করে ।এদের সাহচযে সততার অপমৃত্যু ঘটে ।যে কোনো মুহূর্তে এ ধরনের লোক নৃশংসতম করতে পারে ।বিদ্যা যার চরিএকে সংশোধন করতে পারেনি ,তাকে দিয়ে মানুষের কোনো কল্যাণ হতে পারে না ।দুর্জন ব্যক্তি সাপের সঙ্গে তুলনীয় এবং তার অর্জিত বিদ্যা সাপের মাথার মণির সঙ্গে তুলনীয় ।সাপকে মানুষ ভয় করে ।কারণ যে কোনো সময় সাপ তার ছোবল দিয়ে প্রাণনাশ করতে পারে ।তেমনি বিদ্বান হয়েও যিনি দুর্জন,তার কাছ থেকে যে কোনো সময় ক্ষতির আশাঙ্ক্ষা থাকে ।তাই দুর্জনের বিদ্যা আর বিষধর সাপের মণি উভয়েই বিপদের কারণ হতে পারে ।সুন্দর জীবনের জন্যে ,দুর্জনকে পরিহার করতে হবে –তার বিদ্যাবওা বিবেচনার যোগ্য নয় ।চরিএ মানবজীবনের শ্রেষ্ট সম্পদ ।চরিএ নষ্ট হলে মানুষ আর মানুষ থাকে না ,পশুতে পরিণত হয় ।তাই চরিএহীন বিদ্বানের সাদুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য ।সর্পের মস্তকে মণি থাকিলেও তাহা কি ভয়ংকর নহে?হচয অবশ্যই পদুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য ।
দুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য ।সর্পের মস্তকে মণি থাকিলেও তাহা কি ভয়ংকর নহে?
সম্প্রসারিত ভাব :বিদ্যা ও চরিএ উভয়ই মূল্যবান সম্পদ ।তবে বিদ্যার চেয়ে চরিএ অধিক মূল্যাবান ।তাই কেবল বিদ্বান বলেই কোনো সমাদর পাবার যোগ্য নয় ।বিদ্বান ব্যক্তি যদি চরিএহীন হয় তাহলে তার দ্বারা ব্যক্তি ও সমাজের বিপুল ক্ষতি হতে পারে । কারণ দুর্জন বিদ্বান ব্যক্তি হলে বলে কৌশলে সাধারণ মানুষকে অতি সহজেই বিপথগামী করতে পারে ।আমরা জানি যে ,কোনো কোনো সাপের মাথায় মনি থাকে ।কিন্তু তাই বলে সেই মণি লাভের আশায় বিষধর সাপের সাহচযে কেউ কামনা করে না ।ঠিক সেরূপ দুর্জন ব্যক্তি যদি বিদ্বান হয়ে থাকে ,তবু বিদ্যালাভের আশায় তার সঙ্গে কামনা করা বুদ্দিমানের কাজ নয় ।কারণ দুর্জন বিদ্বান ব্যক্তির সাহচযে নিজের নির্মল ও পবিএ,সুন্দর চরিএ ও কুলষিত হতে পারে ।বিদ্বান দুর্জন হলে তার সংস্পর্শে কেউই ভালো হতে পারে না ।কেননা সে নিজেই কুলযুক্ত চরিত্রের অধিকারী ।এজন্য জীবনকে ও চরিএকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হলে সৎ ,নিষ্ঠাবান ও চরিএবান লোকের সাহচযে লাভ করবে ।দুর্জন বিদ্বান ব্যক্তি থেকে দূরে থাকবে ।
আরো পড়ুন –কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তা বহুদূর ভাব সম্প্রসারণ