জাতি গঠনে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা রচনা অথবা, দেশ গঠনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা রচনা
জাতি গঠনে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা
অথবা, দেশ গঠনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা
ভূমিকা: একজন ছাত্র মানে একজন নাগরিক, একজন দেশপ্রেমিক ও দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার। এ জন্যই দেশ ও জাতি গঠনে ছাত্রসমাজের ভূমিকা অপরিহার্য।
ছাত্রসমাজের মূল লক্ষ দেশ ও জাতি গঠন: প্রত্যেক ছাত্রেরই জীবনের লক্ষ্য থাকে ডাক্তার, ইজ্ঞিয়ার, সাহিত্যিক প্রভৃতির মতো বড় হওয়ার। তারা পরবর্তীতে লক্ষে পৌছে দেশ ও জাতি গঠনে করে থাকে। তাই ছাত্রজীবন থেকেই দেশ ও জাতি গঠনে ছাত্রসমাজের মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করলে বিশ্বের বুকে দেশ উন্নত হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে।
ইসলামি মূল্যবোধ সৃষ্টিতে: ছাত্রসমাজ ইসলামী জ্ঞানচর্চা ও সাধারণ জনগণের মাঝে তা প্র্রচার করে ইসলামী মূল্যবোধ সৃষ্টিতে সাহায্য করতে পারে।
শিক্ষা বিস্তারে: নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করার মহান দায়িত্ব ছাত্রদের। নিরক্ষর বয়স্ক লোকদের এবং বালক-বালিকাদের জন্য গ্রামে ও শহরের মহল্লায় জনগণের সহায়তায় নৈশ বিদ্যালয় স্থাপন করে উচ্চ শিক্ষিত ছাত্রছাত্রী দ্বারা বিনা পরিশ্রমিকে শিক্ষা দান করলে দেশের নিরক্ষরতা দূর করা যায়।
পল্লী উন্নয়নে:পল্লী উন্নয়নে ছাত্রসমাজ বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে পারে। ছুটিতে বা অবসর সময়ে তারা অশিক্ষিত কৃষকদেরকে কৃষিজ্ঞান প্রদান, স্বাস্থ্য ও অধিকার সচেতনতা ও শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে পল্লী উন্নয়ন-এর মাধ্যমে দেশ গঠন করতে পারে।
ঐক্য ও সম্প্রীতি স্থাপনে: ছাত্রসমাজকে সকল প্রকার সংকীর্ণতা পরিহার করে পারস্পরিক প্রীতি ও ঐক্য বজায় রাখতে হবে। ছাত্র সংগঠন ও সমিতি স্থাপনের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে ঐক্য ও সংহতির ভাব গড়ে তুলতে ছাত্রদের সম্মিলিত প্রয়াস একান্ত প্রয়োজন। এতে দেশ ও জাতি শক্তিশালী হবে।
শিল্প ও সংস্কৃতির উন্নতি বিধানে: ছাত্ররা পত্রপত্রিকা, প্রচার, সভা-সমিতি ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের শিল্প ও সংস্কৃতিকে জাগিয়ে তুলতে পারে।
দেশ সেবায়:দেশের দুরবস্থায় ছাত্রসমাজের অনেক দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে। বন্যা, মহামারী ও দুর্ভিক্ষের সময় দেশের নিপীড়িত মানুষের সেবায় তাদের আত্মনিয়োগ করতে হবে।
জনগণকে দেশপ্রেমে উদ্রুদ্ধকরণ: দেশ গঠনে ছাত্রসমাজের প্রথম ও প্রধান কর্তব্য হলো দেশবাসীকে দেশপ্রেমে ও স্বার্থত্যাগে উদ্বুদ্ধ করা। তারা দেশের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে দেশবাসীকে সম্যক ধারণা দিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।
দেশ রক্ষায় : এ দেশের ছাত্রসমাজ মানে একটা নতুন দেশ ও নতুন জাতির জনমত। ইংরেজ বিতারন থেকে শুরূ করে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন ও সর্বশেষ ’৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রামে ছাত্রসমাজের বুকের রক্ত দান, দেশ রক্ষায় তাদের ভূমিকাকে স্মরণ করিয়ে। তাই । অতীতের মতো বর্তমানে দেশজাতিকে রক্ষায় ছাত্রসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
উপসংহার:এ দেশের দুরন্ত সৈনিক বীর ছাত্ররা হলো স্বাধীনতার উজ্জ্বল প্রতীক । ছাত্রসমাজ দেশ ও জাতির প্রতি তাদের কর্তব্য পালন করলে অচিরেই আমাদের দেশ উন্নতির উচ্চ শিখরে আরোহণ করতে সক্ষম হবে।