ভাবসম্প্রসারণ

কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তা বহুদূর ভাব সম্প্রসারণ

 কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তা বহুদূর, মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর

কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তা বহুদূর, মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর


ভাব সম্প্রসারণ:অপার্থিব জগতে স্বর্গ ও নরকের অস্তিত্ব কল্পনা করা হলেও প্রকৃতপক্ষে স্বর্গ ও নরকের অবস্থান পার্থিব জগতের মানুষের মাঝেই বিরাজর করেছে । মানুষের আচার-আচরণ আর হৃদয়বৃওির বহিঃপ্রকাশের মাঝেই স্বর্গ ও নরক উজ্জ্বল হয়ে নিজেদের অস্তিত্ব ঘোষনা করে।

যুগ-যুগান্তরের ধমীয় বিশ্বাস অনুযায়ী মানুষ মনে করে- পৃথিবীর বহু ওপরে অনন্ত নক্ষএপুজ্ঞের মাঝে স্বর্গের অবস্থান আর অধোলোক এক ভয়ংকর অন্ধকার স্থানে নরক বিরাজিত । স্বর্গে বাস করে পুণ্যবান,ভোগ করে অনন্ত সুখ । আর নরকে বাস করে পাপাচারীরা,ভোগ করে কঠিন শাস্তি ।বিশ্বাস করা হয়, এ স্বর্গ –নরকের অস্তিত্ব আছে পরলোক । কিন্তু বাস্তব এ জগতেও আমরা এ স্বর্গ-নরকের উপস্থিতি প্রতিনিয়ত প্রত্যক্ষ করি ।পৃথিবীর বুকে মানুষের মাঝেও এ স্বর্গ-নরকের অবস্থান লক্ষণীয় । নিজের কর্মফলের মধ্য দিয়েছে মানুষ এখানে স্বর্গ-নরকের ফল ভোগ করে । লোভ-লালসা ইত্যাদি মানুষকে অন্যায়ের পথে ঠেলে দেয় ।অন্যায় আচরণ এবং পাপাচারবৃওির ফলে সমাজে নেমে আসে ঘোর অন্ধাকার ও চরম অশান্তি ।ফলে সমাজ নরকের ক্ষুদ্র সংস্করণ হয়ে ওঠে । পক্ষান্তরে,হংসা,দ্বেষ, লোভ-লালসা অন্তর থেকে বিদূরিত করে সরল প্রাণে ঐক্য ও শৃঙ্খালার মধ্য দিয়ে কর্মের পথে অগ্রসর হলে এ ধূলি-মাটির সংসারেই নেমে আসে স্বর্গীয় সুষমা ও শাস্তি । মাটির পৃথিবী তখন হয়ে ওঠে স্বর্গীময় ।

পৃথিবীর মানুষ তার কর্মফলের মাধ্যমেই স্বর্গের সুধা ও নরকের যন্তণা ভোগ করে থাকে ।মানুষের অপকর্মের ফল নরক যন্তণা এবং মহৎ কাজের ফল স্বর্গীয় আনন্দ ।

কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তা বহুদূর, মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর । 

মূলভাব: মানুষকে ভালোবাসলে পৃথিবীতেই স্বর্গসুখ অনুভব করা যায় । আদিকাল থেকে স্বর্গ-নরকের অবস্থান নিয়ে আমাদের কৌতূহলেরও শেষ নেই ।

সম্প্রসারিত ভাব:অপার্থিব জগতে স্বর্গ ও নরক দুই-ই বিপরীতধর্মী স্থান ।যুগ-যুগান্তরের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী মানুষ মনে করে পৃথিবীর বহু উপরে অনন্ত জ্যোতিপুঞ্জের মাঝে স্বর্গের অবস্থান;আর এক ভয়ানক অন্ধকার স্থানে নরক বিরাজিত । এ জীবন সাঙ্গ হলেই কেবল সেসব দেখবার সৌভাগ্য অথবা দুর্ভাগ্য তার হবে । হয়ত এসবের জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হবে দীর্ঘ সময়, পাড়ি দিতে হবে যোজন যোজন পথ।সকল ধর্মেই স্বর্গকে এক অপূর্ব সুষমাণ্ডিত স্থানরূপে গণ্য করা হয়েছে । কেবল পুণ্যাত্নাগণই সেখানে প্রবেশের অধিকার পাবেন । আর যারা দুরাত্না ,যারা পাপাচারী তারা নিক্ষিপ্ত হবে নরকের ভয়ংকর অগ্নিকুন্ডলীর মাঝে ।মানুষের এ প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি কবি অনুরক্ত নন । কবি মনে করেন স্বর্গ এবং নরক পার লৌকিক কোনো বস্তু নয়। এ পৃথিবীতেই স্ব্গ এবং নরক বর্তমান ।

পক্ষান্তরে,কুচিন্তাশীল মন,কুকর্মকারী মানুষ অহর্নিশ নরকরূপ গ্লানিতে দাহ্য হতে থাকে । সৎ চিন্তা ও সৎকর্মের একটি পুত-পবিএ-নির্মল আনন্দ রয়েছে । তা স্বর্গসুখ অপেক্ষা কম সুখদায়ক নয় ।তদ্রুপ পাপের ও একটি নিদারুণ ধিক্কার ও গ্লানি আছে । মানুষ সৎ ব্যক্তির সাহচয নির্মল আনন্দ অনুভব করে ।এরূপ সঙ্গ মানুষ ত্যাগ করতে চায় না ।পক্ষান্তরে , পাপীর সাহচয মানুষ পেতে চায় না সেখানে সকলেই যেন দুর্গন্ধময় গ্লানি অনুভব করা যায় ।সুতরাং বোজা যায়,,এ দুনিয়াতেই মানুষের অভ্যন্তরে স্বর্গসুখ ও নরক জ্বালা উভয়ই বিরাজ করে । তা খোঁজার জন্য আমাদের বহুদূরে কোথাও ছুটতে হবে না । সুন্দর এ পৃথিবীতে নিজেকে প্রতিবন্ধনে জড়াতে পারলেই স্বর্গের সুখ অনুভব করা যায়

কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তা বহুদূর, মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর ।

মূলভাব : মানুষকে ভালোবাসলে পৃথিবীতেই স্বর্গসুখ অনুভব করা যায় ।

সম্প্রসারিত ভাব : স্বর্গ ও নরক বলে দুটি বিপরীতধর্মী স্থান আমাদের ঊর্ধ্ধলোকে রয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করে থাকি ।মহাপ্রশান্তির স্থান হচ্ছে স্বর্গ । পক্ষান্তরে,ভীষণ পঙ্কিল ও গ্লানিকের চির অশান্তিময় স্থান নরক ।উভয়েই আমাদের এ মানবজগৎ হতে বহুদুরে আছে বলে আমরা বিশ্বাস করি । কবির মতে, এগুলো দূরে কোথাও নয় । মানুষের রাজ্যে উভয়েই বিদ্যমান এবং তা এ মর্ত্যেই প্রকাশ পেয়ে থাকে ।

স্বর্গ ও নরক মানুষের হৃদয়ের অভ্যন্তরেই ব্যাপ্ত থাকে । যে ব্যক্তি সৎ চিন্তা ‍ও সৎ কর্ম করে সে ব্যক্তি এ দুনিয়াতেই এক মহা প্রশান্তি লাভ করে । পক্ষান্তরে, কু-চিন্তাশীল মন,কু-কুমারী মানুষ অহর্নিশ নরকরূপ গ্লানিতেই দগ্ধ হতে থাকে । সৎচিন্তা ও সৎকর্মের একটি পবিএ নির্মল আনন্দ রযেছে । তা স্বর্গসুথ অপেক্ষা কম সুখদায়ক নয় । তদ্রুপ পাপের একটি নিদারুণ ধিক্কার ও গ্লানি আছে । মানুষ সৎব্যক্তির সাহচযে নির্মল আনন্দ অনুভব করে।এরূপ সঙ্গ মানুষ ত্যাগ করতে চায় না । পক্ষান্তরে,পাপীর সাহচয মানুষ পেতে চায় না, সেখানে সকলেই যেন দুর্গন্ধময় গ্লানি অনুভব করে ।সুতরাং বোঝা যায়, এ দুনিয়াতেই মানুষের হৃদয় অভ্যন্তরে স্বর্গসুখ ও নরক জ্বালা উভয়ই বিরাজ করে । তা খোঁজার জন্য আমাদের বহুদূরে কোথাও ছুটতে হবে না । সুন্দর এ পৃথিবীতে নিজেকে প্রতি বন্ধনে জড়াতে পারলেই স্বর্গের সুখ অনুভব করা যায় ।

আরো পড়ুন – শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button