আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী ,পরে সকলের তরে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।
আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী ,পরে সকলের তরে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।
ভাব সম্প্রসারণ : পরের জন্য জীবন উৎসর্গ করার মাধ্যমে মানবজীবন সার্থকতায় উজ্জ্বল হয়ে ওঠে ।সমাজের কল্যাণে নিজেদের নিঃশেষে বিলিয়ে দেওয়ার মধ্যে আছে পরম সুখ,অনির্বচনীয় আনন্দ ও অপরিসীম পরিতৃপ্তি ।অন্যের উপকার সাধনই তাই সবার লক্ষ্য হওয়া উচিত ।
মানুষ একে অপরের ওপর নির্ভর শীল বলে তাকে সমাজবদ্ধভারে বাস করতে হয় ।এজন্য পরস্পর প্রীতি ও ভালোবাসা ,নির্ভরতা ও সহযোগিতার পরিবেশ মানুষ নিজের প্রয়োজনেই সৃষ্টির গোড়া থেকে গড়ে তুলেছে ।শুধু পরিবার বা সমাজ নয় ,রাষ্ট্র নয়,সমগ্র পৃথিবী ও রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং জাতিগোষ্ঠী পরস্পর সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য ,নির্ভরতা ও সহযোগিতার মধ্যে বাস করার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছে ।কারণ একজন মানুষ যেমন সমাজবিচ্ছিন্ন হয়ে বাস করতে পারে না ,তেমনি পৃথিবীর বৃহৎ মানবগোষ্ঠী ও পরস্পর নির্ভরশীলতা ছাড়া বাস করতে পারে না ।এমন একটি বৈশ্বিক সমাজ আমরা নিজেদের নিয়ে আত্নকেন্দ্রিকভাবে ,শুধু নিজের সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে বাস করতে পারব না ।প্রকৃতপক্ষে ,মানুষ শুধু ভোগ-বিলাস ও স্বর্থে জন্যেই জন্নগ্রহন করে নি । পরের কল্যাণে জীবনকে উৎসর্গ করার মাঝেই তার জীবনের চরম ওপরম সার্থকতা ।পরের কল্যাণ সাধনই মহও্বের লক্ষণ ।অপরের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারলেই জীবন সুখময় ও আনন্দময় হয়ে ওঠে ।জগতের সাধু ও মহৎ ব্যক্তিগণও তাই করেন । তাঁরা সর্বদা পরের হিত সাধনে ব্যাপৃত থাকেন এবং পরের জন্য জীবন বিসর্জন দিতেও কুন্ঠাবোধ করেন না । কেননা ব্যক্তিস্বার্থ পরিহারের মাধ্যমেই সমাজ সুন্দর ও সার্থক হয়ে ওঠে ।মহৎ ব্যক্তিগণ বিশ্বমানবের ।তাঁরা সকলের প্রিয় এবং সকলের আপনজন ।তাঁদের জীবন পুষ্পের ন্যায় পরের জন্য উৎসর্গীকৃত ।মানুষকে ব্যক্তিস্বার্থের কথা না ভেবে সবার স্বার্থের কথা ভাবতে হবে । হৃদয়কে ফুলের মতো বিকশিত করতে হবে ।ব্যক্তিস্বর্থের জন্যে মানুষ যা করে তা নিরর্থক ,নিষ্ফল । মহাকালের চিরন্তন স্রোতে তা বিলীন হয়ে যায় ।মানুষ সমস্ত জীবন ধরে ফসল চাষ করে ।অর্থাৎযে ব্যক্তি দেশ ও দশের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে মৃত্যুর পরও তার সৃষ্ট সোনার ফসল টিকে থাকে ।তাই সবার স্বার্থে আত্ননিয়োগ করতে পারলে জীবন হয় সার্থক ও ফসল ।যাঁরা সত্যিকারের মানুষ তাঁরা নিজের স্বার্থের কেন্দ্রবিন্দুতে নিজেকে আচ্ছন্ন করে রাখেন না ।যেসব আবিষ্কার ও মহৎ কর্ম আজ বিশ্বকে সভ্যতার চরম শিখরে উপনীত করেছে তার মূলে রয়েছে মানুষের অবদান ।কিন্তু তা ব্যক্তিগতভাবে কুক্ষিগত করে রাখা হয় নি,বরং মানুষের জন্যে ,দেশ ও দশের জন্যে তা উৎসর্গ করে দেওয়া হয়েছে ।ফলে মহৎ কর্মের জন্যে সে অমরতা লাভ করে মানুষের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে ।আমরা শুধু নিজের জন্যই জন্নগ্র্রহন করিনি ,নিজের সুখই আমাদের একমাএ কাম্য হতে পারে না ।প্রকৃতপক্ষে –পরের কল্যানকামনা,অন্যের সুখ-দুঃখ –আনন্দ-বেদনা ভাগ করে নেওয়ার মধ্যেই প্র্রকৃত সুখ ।এ সুখই আমাদের প্রার্থিত হওয়া উচিত ।
আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী ,পরে সকলের তরে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।
ভাব সম্প্রসারণ : পরার্থপরতা মানুষের বিশিষ্ট গুণ ।আত্নকেন্দ্রিক জীবনযাপনের জন্যে মানুষ পৃথিবীতে আসেনি ।পরস্পরের প্রতি সহযোগিতা ও সহানুভুতির মধোই মানবজীবনের প্রকৃত সার্থকতা নিহিত ।
কিছু আত্নকেন্দ্রিক স্বার্থপর মানুষ লোকসমাজে আছে ।তারা সমাজ-সংসারের কথা ভুলে নিজেকে নিয়ে অতি ব্যস্ত থাকে ।অথচ সমাজ-সংসারের কাছে প্রত্যেকের কিছু দায়বদ্ধতা থাকে ।মানুষ সামাজিক জীব ।সংঘবদ্ধ সমাজ –জীবনই তাক দিয়েছে শারীরিক ও মানসিক নিরাপওা;শান্তি-শৃঙ্খলাপূর্ণ অনুকুল পরিবেশ ।ব্যা্ক্তি-মানুষের কল্যাণে সমাজ যেমন এগিয়ে আসে,সমাজও আশা করে তার বৃতওর কল্যাণে সমাজ যেমন এগিয়ে আসে ,সমাজও আশা করে তার বৃহওর কল্যানে ব্যক্তি-মানুষ তেমনই ক্ষুদ্র স্বার্থের কথা ভুলে সহযোগিতার হাত বাড়াবে,অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবে অকুন্ঠচিওে ।সংঘবদ্ধ সমাজ-জীবনে আত্নকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা,স্বার্থপর মনোবৃওি এবং কাযকলাপ সমাজের স্বর্থবিরোধী ।প্রতিটি সামাজিক মানুষ পারস্পরিক সহযোগিতার যোগসূ্তে আবদ্ধ ।সংসারের কেউ নিজের জন্যে আসেনি ।কেউ একা বাঁচাতে পারেনা ।বাঁচলেও সে বাঁচা প্রকৃত বাঁচা নয় ।আত্নকেন্দ্রিক একক জীবন ভয়ংকর দুঃসহ ।পাঁচজনের সঙ্গে মিলেমিশে বাঁচাই যথার্থ বাঁচা ।সেজন্য স্বার্থত্যাগ অতীব জরুরি ।আত্নকেন্দ্রিকতার শক্ত খোলসটার ধ্বংস অনিবায ।পরার্থে আত্নৎসর্গে জীবন সার্থক হয়,ধন্য হয় ।পরহিতে নিজেকে নিঃশেষে দান করে প্রকৃত সুখ,দিব্যনন্দ ও পরম তৃপ্তির অধিকারী হয় মানুষ ।ব্যক্তিস্বার্থের উধ্বে মানবতার স্বার্থকে বড় করে দেখার মধ্যেই জীবনের প্রকৃত সার্থকতা ।মানুষ যদি কেবল আত্নস্বর্থে নিয়ে মগ্ন থাকত তাহলে পৃথিবীর এ মানব সভ্যতা কোনো দিনই গড়ে উঠত না ।