আটশো কোটির পৃথিবীতে নতুন জন্মের প্রয়োজনীয়তা
আটশো কোটির পৃথিবীতে নতুন জন্মের প্রয়োজনীয়তা
আটশোকোটি‘র পৃথিবীতে নতুনজন্মের প্রয়োজনীয়তা
(তাসলিমানাসরীন এর ফেসবুক পোস্টেরসমালোচনা)
বিপরীতলিঙ্গের দুই স্তন্যপায়ীর প্রাকৃতিক চাহিদার ফলন ‘তসলিমা নাসরীন‘। তিনি মনেকরেন পৃথিবীতে সন্তান জন্ম দেওয়ার ভুত চেপে আছে নারীদের মনে। অথচ বর্তমান আটশো কোটি‘র পৃথিবীতে যাঅর্থহীন। অথবা ‘মানবজাতি‘ বিলুপ্তির পথে গেলেও একে বাঁচানোর দায় তিনি নিতে চান না।
তারএই কথার উপর ভিত্তি করে পৃথিবীর মানুষগুলোর একশো বছর যাপন করার পরবর্তী পৃথিবীর কথা কল্পনা করা যাক।
বর্তমানপৃথিবীতে মানুষের গড় আয়ু ৬৫–৭৫ বছর ।আজ থেকে একশো বছর পর সন্তান উৎপাদনেউদাসীন মানুষের সিংহভাগই প্রাকৃতিক ধ্রুব সত্য পরিণয় ‘মৃত্যু‘র আক্রমণের স্বীকারহবে। তখন মানবের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা প্রায় অসম্ভব হবে। কিন্তু তাতে তাসলিমা‘র কি? তিনিতো মানব অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে দায়বদ্ধ নন। তবে যারা মানুষকে পৃথিবীর সবচেয়ে সভ্য এবং শ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে জ্ঞান করেন তারা অবশ্যই এমন সংকট চাইবেন না। কারণ যে জাতি নিজেদেরঅস্তিত্ব সংকট টেনে আনতে দ্বিধাবোধ করে না তারা নিশ্চয়ইসভ্য নয়!
অনায়াসেঅস্তিত্ব সংকট মেনে নিয়ে মানব সভ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন তাসলিমা। এখানে অবশ্য মানব সভ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয় নি হয়েছেনতাসলিমা নিজে। মানসিক দিক থেকে কতোটুকু সভ্য হতে পেরেছেন তিনি? এমন প্রশ্ন উঠে।
প্রতিত্তোরআসতে পারে সভ্যতা বলতে কেবল সন্তান জন্মদানই নয়। অন্যান্য বিষয়ও রয়েছে।
হ্যাঁ, পৃথিবীতে কেবল সন্তান জন্মদানই মুখ্য বিষয় নয়। একটা সুগঠিত, সুন্দর এবং সুশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করতে যা যা প্রয়োজনতা করে মানবসভ্যতাকে যুগযুগ ধরে টিকিয়ে রাখতে হবে।
যারামূল্যবান কাজ করছে জীবনে তাসলিমা‘র মনে হয়না তাদের উচিত অহেতুক শিশু জন্ম দিয়ে কাজের সময় নষ্ট করা।
–পৃথিবীর সকল জ্ঞানীগুণীরাই মূল্যবান কাজ করছেন। জীবনের যাত্রাপথে সুকান্তের কবিতার মতো পৃথিবীকে বাসযোগ্য করার প্রয়াসীদের যদি উত্তরপরুষই না থাকে তবেকার জন্য পণ্ডশ্রম?
তাসলিমা‘র মতে আটশোকোটির পৃথিবীতে নতুন জন্ম কাঙ্ক্ষিত হওয়ার কথা নয়।
–অবশ্যইকাঙ্ক্ষিত হওয়ার কথা কেননা যেখানে মানবজাতি নিয়ে প্রশ্ন সেখানে তো তিনি জাতিকেবিভাজিত করে বংশবৃদ্ধির দায়িত্বটা কেবল মূর্খ এবং অলস লোকের হাতে দিতে পারবেন না। আর যদি তাইদেন তবে নেপোলিয়ন এর একটি বিখ্যাতউক্তি (তুমি আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমিতোমাকে শিক্ষিত জাতি দেবো।) অনুযায়ী একটি মূর্খ প্রজন্ম আমাদেরকে উপহার দিতে চাচ্ছেন। কারণ জ্ঞানীগুণীরা সবাই তাঁদের মূল্যবান কাজে ব্যস্ত।
তবেহ্যাঁ, তাসলিমা‘র একটা কথারসাথে আমি একমত যে মেয়েরা যদিভেবে নেয় জন্ম না দিলে তাদেরজীবনের কোনো অর্থ নেই এটা ভুল। অনেকেই শারীরিক অক্ষমতার কারণে জন্ম দিতে পারেন না তাই বলেনিরর্থ জীবন ভাবার কোনো অবকাশ নেই। পৃথিবীতে মানুষ আসার মূল লক্ষ্য হলো শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। সেই কাজে কিঞ্চিৎ অংশ নিতে পারলেও জীবন স্বার্থক। সুতরাং কারোর জীবনই অর্থহীন নয়।
✑ মাহফুজবিল্লাহ মুরাদ