অর্থ সম্পদের বিনাশ আছে, কিন্তু জ্ঞান সম্পদ কখনো বিনষ্ট হয় না – ভাবসম্প্রসারণ -recent published

 অর্থ সম্পদের বিনাশ আছে, 
 কিন্তু জ্ঞান সম্পদ কখনো বিনষ্ট হয় না।
অর্থ সম্পদের বিনাশ আছে, কিন্তু জ্ঞান সম্পদ কখনো বিনষ্ট হয় না
অর্থ সম্পদের বিনাশ আছে, কিন্তু জ্ঞান সম্পদ কখনো বিনষ্ট হয় না।
মূলভাব: পৃথিবীতে যে কোনো কিছু নষ্ট হতে পারে, হারিয়ে যেতে পারে। কিন্তু জ্ঞান চিরন্তন। জ্ঞান বিতরণ করলেও কমে না বরং বৃদ্ধি পায়। সম্প্রসারিত ভাব: মানুষের বেচেঁ থাকার জন্য অর্থের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। অর্থের জন্য মানুষ উদয় অস্ত পরিশ্রম করে চলেছে। অর্থ এমন এক সম্পদ যা দিয়ে আমরা সমাজ জীবনে ব্যক্তি মানুষের অবস্থান নির্ণয় করে থাকি। কিন্তু এ অর্থ সম্পদ কেবল মানুষের বাইরের দিকটাই প্রকাশ করে। অর্থসম্পদ যতই শক্তির অধিকারি হোক, জ্ঞান সম্পদের কাছে তা নিষ্প্রভ। সত্যিকারের জ্ঞানী ব্যক্তি বিত্তশালী লোকের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিমান। অর্থসম্পদের কোনো স্থায়ী নেই। একককালের সম্পদশালী জমিদারও এক সময় নিঃস্ব হয়ে পড়েন। কিন্তু একজন জ্ঞানী ব্যক্তি সময়ের ব্যাপ্ত পরিসরে অধিকতর জ্ঞানী হতে থাকেন। বিত্তবানের ধনভান্ডার এক সময় নিঃশেষ হয়ে আসে, কিন্তু বিদ্বানের জ্ঞানভান্ডার ক্রমাগত সমৃদ্ধ হতে থাকে। তাই অর্থ সম্পদে মনয়, জ্ঞান সম্পদে সমৃদ্ধ ব্যক্তিগণই দেশের ও জাতির প্রকৃত সম্পদ, যার কোনো বিনাশ নেই। এজন্য অর্থ সম্পদের মাপকাঠিতে নয়, জ্ঞানসম্পদের মাপকাঠিতে মানুষের মূল্যায়ন হওয়া উচিত। কারণ অর্জিত অর্থ নিঃশেষিত হয়, কিন্তু অর্জিত জ্ঞান চিরস্থায়ী। এর কোনো বিনাশ নেই। আমাদের মহানবী (স) তাই জ্ঞানীর কলমের কালিকে শহীদের রক্তের চেয়েও পবিত্র বলেছেন। তিনি দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত মানুষকে জ্ঞানার্জনের উপদেশ দিয়েছেন।

অর্থ সম্পদের বিনাশ আছে, কিন্তু জ্ঞান সম্পদ কখনো বিনষ্ট হয় না।
ভাব-সম্প্রসারণ:

নশ্বর এই পৃথিবীতে পতিটি বস্তুর ক্ষয় বা বিনাশ অনিবার্য, কিন্তু যে সম্পদটির বিনাশ নেই বরং বিকাশ আছে তা হলো জ্ঞানসম্পদ। জ্ঞান অবিনাশী বলে একবার তা অর্জন করলে সারাজীবনের সম্পদ হিসেব পরিগণিত হয়। জ্ঞানই মানুষের চরম, পরম ও একান্ত নিজস্ব মহামূল্যবান সম্পদ।
মানুষের বেঁচে থাকার জন্যে অর্থের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। অর্থের জন্যে মানুষ উদয়ান্ত পরিশ্রম করে । অর্থ এমন একটি সম্পদদ যা দিয়ে আমরা ব্যক্তি ও সমাজজীবনে মানুষের অবস্থানকে নির্ণয় করে থিাকি। কিনইু এ অর্থসম্পদ কেবল মানওলের বাইরের দিকটিকেই প্রকাশ করে। অর্থ-সম্প কযতই শক্তি অধিকারী হোক না কেন, জ্ঞান সম্পদের কছে তা নিষ্প্রভ। স্ত্যিকারে জ্ঞানী ব্যক্তি বিত্তশালী লোকের চেয়ে অনেক বেশি ধনবান ও শক্তিমান। বস্তুত অর্থ- সম্পদের কোনো স্থায়িত্ব নেই। আজকে রাজা, কারকে ফকির এরকম দৃষ্টান্ত অনেক রয়েছে । বিত্তবানের ধনভান্ডার এক সময়ে নিঃশেষ হয়ে আসে, কিন্তু বিদ্বানের জ্ঞানভানাডার ক্রমাগত সমৃদ্ধ হতে থাকে। সময়ের ব্যবধানে সে অধকতর জ্ঞানী হতে থাকে। নশ্বর পৃথিবীতে জ্ঞান অবিনশ্বর। যিনি জ্ঞানী তিনি আমৃত্যু জ্ঞানরূপ সম্পদে সম্পদশালী। তার ক্ষয় নেই। এমনকি মৃত্যুর পরেও জ্ঞানের প্রাচুর্য পৃথিবীতে বিরাজ করে জ্ঞানীদের অমরত্ব দান করে । তাই অর্থ- সম্পদের নয় জ্ঞানসম্পদের সমৃদ্ধ ব্যক্তিগণই দেশ ও জাতির প্রকৃত সম্পদ, আর এ জন্যে অর্থসম্পদের মাপকাঠিতে নয়, জ্ঞানসম্পদের মাপকাঠিতেই মানুষের মূল্যয়ন হওয়া উচিত। তাই, মহানবী (স) ‘জ্ঞানরি কলমের কালিকে শহীদের রক্তের চেয়েও পবিত্র,’ বলেছেন। তিনি ‘দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত’ মানুষকে জ্ঞানার্জনের উপদেশ দিয়েছেন এবং এর জন্য ‘সুদূর চিনেও যেতে’ উৎসাহিত করেছেন।
জ্ঞান অতুলনীয় সম্পদ। জ্ঞানার্জন ধনার্জনের চেয়েও মহত্তর। মানুষ তার স্বরূপকে ঐশ্বর্যমন্ডিত করতে পারে শুধু জ্ঞান আহরণের মধ্য দিয়েই। জাগ্রত করতে পারে নিজের ক্ষমতাকে, সেবাদান করতে পারে বিশ্বমানবতাকে । তাই সব মানুষের উচিত জ্ঞান আহরণ করা। স্মরণ রাখতে হবে যে, ‘শিক্ষা বা জ্ঞানই একমাত্র সম্পদ, যা তোমার জীবনের মতো মহমূল্যবান।’

অর্থ সম্পদের বিনাশ আছে, কিন্তু জ্ঞান সম্পদ কখনো বিনষ্ট হয় না।
মানুষ যখন থেকেই সভ্যতা নির্মাণ করার শুরু করেছে তখন থেকে অর্থের গুরুত্ব বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমান সভ্যতার মাপকাঠিতে অর্থ একটি বড় ব্যাপার। অর্থ দিয়েই মূলত আমরা সমাজে মানুষের অবস্থখান এবং গ্রহণযোগ্যতা পরিমাপ করে থাকি। বত্তবান হিসেবে সমাজে পরিচিত হওয়াটাও অনেকের কাছে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। কিন্তু এই বিত্ত-বৈভব,ধন-সম্পদ যেকোনো মুহুর্তে হারিয়ে যেতে পারে। আমীর পরিণত হতে পারে ফকিরে। কিন্তু জ্ঞান এমন এক সম্পদ যা কোনোদিন বিন্ষট হয় না। একজন জ্ঞানী চিরদিনের জন্য জ্ঞানী । কিন্তু একজন ধনী চিরদিন ধনী নাও থাকতে পারে। অর্জিন সম্পদ যেকোনো সময় হা ছাড়া হয়ে যেতে পারে। অর্জিত জ্ঞান কখনোই হারানোর ভয় থাকে না। ধনী ব্রক্তি তার সম্পদ দান করে নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু জ্ঞানীর বিতরণ করা জ্ঞান অন্যদেরকেও জ্ঞানীর কাথারে সামিল করে অনিঃশেষ থেকে যায়। জ্ঞান মানুষকে অমরত্ব দান করে, সম্পদ তা পারে না। ক্রেটিস, প্লেটো, নিউটনরা বহু শতাব্দির আগে প্রথিবী ছেড়ে চলে গেলেও তাদের জ্ঞান সভ্যতাকে এখনো পথ দেখাচ্ছে।জ্ঞানের শাশ্বত এ সত্য সবারই জানা, সম্পদের বিনাশ আছে কিন্তু জ্ঞান সম্পদের বিনাশ নেই । মানুষের গড়া বহু সভ্যতা বহু ধন সম্পদ সময়ের সাথে সাথে বিলীন গেছে। কিন্তু মানুষ যে জ্ঞান পৃথিবীতে রেখে গেছে তা ক্রমশ নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু জ্ঞানের কারণেই মানুষ সকল কৃষ্টির মাঝে শ্রেষ্ঠতব্ অর্জন করেছে।
শিক্ষা:জ্ঞান আহরণ এবং জ্ঞান বিতরণ সভ্যতাকে গুহার অন্ধকার থেকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে। সুতরাং জ্ঞান কখনোই বিনষ্ট হতে পারে না। অর্থ সম্পদ মানুষকে সাময়িক তৃপ্তি দিলেও জ্ঞঅনের সমকক্ষ হতে পারে না।

Related Articles

Back to top button